বুধবার ছিল ইউক্রেনের ৩১তম স্বাধীনতা দিবস। ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর চ্যাপলিনের একটি রেলস্টেশনে রাশিয়ার রকেট হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া। কিয়েভের কর্মকর্তারা জানান, এদিন ব্যাপক গোলাবর্ষণ করা হয়েছে এবং ওই হামলায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন ধরে যায়।
এদিন হামলার বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। হামলার আশঙ্কায় দেশটির কর্তৃপক্ষ স্বাধীনতা দিবসে গণজমায়েত ও উদযাপন বাতিল করে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সাথে বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, এই হামলায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ৫০ জন। এদিকে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এ সময় শস্য রপ্তানি নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন গুতেরেস। তবে খাদ্যের সাথেসাথে সারের আন্তর্জাতিক বাজারকেও স্থিতিশীল রাখার আহ্বান জানান তিনি।
ইউক্রেনে রুশ অভিযানের ছয় মাসের মাথায় সেপ্টেম্বরে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলার জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দেশজুড়ে বাঙ্কার ও বোমা শেল্টার তৈরি করা হচ্ছে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বা অভিভাবকদের মানসিক শান্তি দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। ইউক্রেনে নতুন শিক্ষাবর্ষ একটি উৎসবের দিন। যেখানে শিশুদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেয় শিক্ষকরা। কিন্তু দেশটিতে রুশ হামলায় সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে। ইউক্রেনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে দেশটির ১৭ হাজার স্কুলের মধ্যে দুই হাজার ৩শ টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ৫৯ শতাংশেরই সেপ্টেম্বরে ক্লাশ শুরুর প্রস্তুতি নেই। তবে ইউনিসেফের সহায়তায় বেশ কিছু স্কুল মেরামত করা হয়েছে। এছাড়া করোনার দুই বছর এবং যুদ্ধের অর্ধ বছরে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষাবিদরা। জুনে পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ৫৭ লাখ স্কুলগামী শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২৮ লাখ শিশু। ইউক্রেনীয় সরকারের তথ্য মতে, যুদ্ধে কমপক্ষে ৩৬১ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। আহত এক হাজার ৭২ জন।
Leave a Reply