এক মাসের মেয়াদে আহবায়ক কমিটি গঠনের পর মাস পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কোন আভাস না পাওয়া, তড়িঘড়ি করে আহবায়ক কমিটি গঠনের সময় দীর্ঘদিন রাজনীতি সাথে জড়িত ত্যাগী নেতারা কমিটিতে জায়গা না পাওয়া, বিতর্কিত ব্যাক্তিকে কমিটিতে রাখা, রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থেকেও অনেকেই কমিটিতে জায়গা পাওয়া এ সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা সমালোচনা তৈরী হয়েছে আঞ্চলিক শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগে। এ নিয়ে তৃনমূল সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যেও রয়েছে নানা গুঞ্জন।
জানা যায়, কেরানীগঞ্জ গুদারাঘাট আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ায়, গত ১১/৬/২২ তারিখে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাজী মিরাজুর রহমান সুমন ও সাধারণ সম্পাদক হাজী রমজান আলীর স্বাক্ষরিত প্যাডে মেয়াদ উত্তীর্ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এক মাসের জন্য ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্ববায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ৫১ সদস্যদের ভিতরে অনেকেই এসেছে যারা আগে কখোনোই রাজনীতি করে নি। রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থেকে সরাসরি আহ্ববায়ক কমিটিতে জায়গা পাওয়ায় অনেকটা বিষ্ময়য়ের জন্ম দিয়েছে। নতুন অণেকেই জায়গা পেলেও উক্ত আহ্ববায়ক কমিটিতে জায়গা পাননি সাবেক আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের অনেক নেতা। এমনকি সংগঠনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটিতে জায়গা করতে পারেনি।
এছাড়া চাঁদাবাজ দখলবাজ লোকদের কমিটিতে ঠাই দেয়ায় চলছে দলের অভ্যন্তরে নানা গুঞ্জন। এদের মধ্যে ১ নং যুগ্ন আহবায়ক আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তার অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে ফুটপাতে দোকান বসানোর কথা বলে দিদার হোসেনের কাছ থেকে টাকা নিয়েও কয়েকদিন পরে অন্য আরেকজনের থেকে বেশি টাকা নিয়ে দিদারকে সেখান থেকে উঠিয়ে দেয়া, রাস্তায় যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা ও জনগণের হাঁটাচলায় বাধা সৃষ্টি করে নদীর পাড়ে ব্রিজের উপরে ঈদ মৌসুমে ভ্রাম্যমান দোকান বসিয়ে চাঁদা আদায়, পিকনিকে গিয়ে মদ্যত অবস্থায় মারামারি করা অন্যতম। ব্রীজের উপর দোকান বসিয়ে চাঁদা আদায় প্রসঙ্গে হকারদের দলনেতা রফিক ও বাবুল জানায়, ঈদ মৌসুমে আমরা প্রতি বছরই ফুটপাতে দোকানে স্থাপন করি সেজন্য এখানকার নেতাদের চাঁদা দিতে হয়। করোনার আগে নদীর পাড়ের ব্রিজে দোকানে স্থাপন করার জন্য হান্নানকে ষাট হাজার টাকা দিতে হয়েছিল, মাঝে দুই বছর করোনার সময় কিছুটা কম দিয়েছিলাম, এবছর আবার পরিস্থিতি কিছুটা ভালো তাই আগের হিসেবেই আবার দিতে হয়েছে।
আবু কালাম নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে জেলা পরিষদ রোডে ফুটপাতে দোকান বসানোর কথা বলে দুইদিন দোকান বসানোর পড়ে সেখানে থেকে তাকে উঠিয়ে দেয়ার অভিযোগ আছে হান্নানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে হান্নান মৃধা বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে।
বিতর্কিত লোকজন কিভাবে আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পেল এ বিষয়ে জানতে চাইলে আঞ্চলিক শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্ববায়ক , মো: মানিক শেখ জানান, বর্তমান আহ্ববায়ক কমিটিতে কাকে নেয়া হয়েছে কাকে নেয়া হয় নি এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার সাথে কোন আলোচনা ছাড়াই আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে আহ্ববায়ক কমিটিতে অনেকের নাম দেখে আমি হতভম্ব হয়েছি। আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের ত্যাগী অনেক নেতা কর্মীর নাম এখানে নেই। আবার অনেকের নাম এখানে আছে,যাদের কখনো আওয়ামী লীগের কোন মিটিং মিছিলে আমি দেখিনি।
দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাজী মিরাজুর রহমান সুমন বলেন, কিছু দিনের মধ্যেই সম্মেলনের মাধ্যমে আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি দেয়া হবে। গুদারাঘাট আঞ্চলিক শাখা আওয়ামীলীগের মূল দলের নেতারা এবং এলাকার অনেক বয়জে্যষ্ঠ ব্যাক্তি যারা আওয়ামীলীগ করে তারা কিছু ব্যবসায়ীর নাম দিয়েছে তাদের সাথে সমন্বয় করে নতুন কিছু নাম আহ্ববায়ক কমিটিতে এসেছে।
চাদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে সুমন বলেন, কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আছে কিনা সেটা আমার জানা নাই। তবে অভিযুক্ত কেও কমিটিতে আসতে পারবেনা। অভিযোগের প্রমান পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন সন্ত্রাস,চাঁদাবাজ, খারাপ ব্যাক্তি আমাদের কমিটিতে আসতে পাড়বে না।
Leave a Reply