কেরানীগঞ্জ নির্মিত ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার সকালে কেরানীগঞ্জের তারানগর ইউনিয়নের মধ্যেরচর এলাকায় প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত জমিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকা জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল ইসলাম এ চেক বিতরণ করেন। পরে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডঃ মোঃ আহসান উল্লাহর কাছে জমির মালিকানার কাগজপত্র ও দখল হস্তান্তর করেন প্রশাসক।
জানাগেছে, জাতীয় সংসদে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৩ পাশ এবং রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। এর পর থেকে উপাচার্যের নেতৃত্বে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, আধুনিকীকরণ, ফাজিল (স্নাতক) ও কামিল (স্নাতকোত্তর) পর্যায়ের পাঠক্রম প্রনয়ণ ও পাঠ্যসূচীর আধুনিকীকরণ ও উন্নতিসাধন, শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় পরিচালনা করছে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়।
https://youtu.be/nAeONQPGi3g
অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, চেক বিতরণ ও জমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার উচ্চ শিক্ষা নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ ও বাস্তবায়নে দেশের আলেম ওলামা পীর মাশায়েখ ও ১৫০০ শত ফাজিল -কামিল, অনার্স-মাস্টার্স মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইসলামি আরবি বিশ^বিদ্যালয়কে জমি বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। ইসলামি আরবি বিশ^বিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষায় নিশ্চয় আরো অধিক গতি সঞ্চার হবে বলেও আশা ব্যাক্ত করেন তিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জমি অধিগ্রহনে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের জন্য সরকার ক্ষতিপুরনের ব্যবস্থা করেছেন। আপনারা কেউ দালালের কাছে যাবেননা। সরাসরি আমার সাথে আমার অফিসে দেখা করবেন। আমি আপনাদের সমস্যার কথা শুনবো, সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবো ।’
ইসলাম ও আরবি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার দাবি পূরণে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান সরকার। বর্তমানে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস রয়েছে রাজধানীর ধানমন্ডি ও বসিলাতে। কেরানীগঞ্জে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে ১০ তলা প্রশাসনিক ভবন ও ছয়তলা একাডেমিক ভবন ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য থাকবে আবাসিক সুবিধা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিত হবে আধুনিক ডরমেটরি। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একটি ডরমেটরি ও দুটি স্টাফ কোয়ার্টার, শিক্ষার্থীদের দুটি ডরমেটরি, একটি অডিটরিয়াম, ভিসির বাংলো এবং রেজিস্ট্রারের জন্য আবাসিক ভবন। রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দেশের সব অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা লাভবান হবে।
অনুষ্ঠানে এ সময় অন্যান্যের মাঝে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ডক্টর আবুল কালাম আজাদ প্রকল্প পরিচালক রফিকুল আহমদ সিদ্দিকী, কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, জেলা প্রশাসক (এল,এ).ঢাকা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক, কানুনগো সার্ভেয়ার এবং ঢাকা জেলা প্রশাসনের টিম ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. জাভেদ আহমাদ,কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান,সহকারী রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ জাকির হোসেন ও জনাব ফাহাদ আহমদ মোমতাজী, সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) জনাব মোঃ জিয়াউর রহমান’সহ শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীগন। ।
উল্লেখ্য,”ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন শীর্ষক” প্রকল্পের আয়তন মোট ১৭.০৮৯৪ একর জমি, যার মধ্যে ৩.০০ একর জমি সৌদি সরকারের অনুদানে “আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট” এর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর “ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন শীর্ষক” প্রকল্পের পূর্ত কাজ বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করবে।
Leave a Reply