অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিক্ষা উপকরণ সুবিধা বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ডেন্টাল শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে এই কর্মসূচী পালন করা হয়।
এসময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জনসহ ক্যাম্পাসে অবস্থান করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের সাথে একাত্ত্বতা প্রকাশ করে এতে যোগ দেন এমবিবিএস শিক্ষার্থীরাও।
পরে উপাধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে, সাত দিনের মধ্যে দাবী আদায় না হলে অধ্যাক্ষের আপসারণসহ কঠোর কর্মসূচীর আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন আন্দোলণরত ছাত্রছাত্রীরা।
আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, দেশের ৯টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিডিএস সুবিধা থাকলেও সবথেকে অনুন্নত এই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। যেখানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে আলাদা ডেন্টাল ইউনিট ও ৪০ থেকে ৫০ টি কার্যকর ডেন্টাল চেয়ার আছে। ময়মনসিংহ, সিলেট ও রংপুর মেডিকেল কলেজে ডেন্টাল এর জন্য আলাদা ভবন রয়েছে এবং সেখানকার শিক্ষার্থীরা সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে শিক্ষা গ্রহণ করছে। অথচ ঢাকার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী একটি কলেজ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ। সেখানে ডেন্টাল ইউনিট এর শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষা উপকরণের ব্যবস্থা নেই। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে এর দ্রুত সমাধান আশা করছি।
https://youtu.be/rid7yUbVaDs
সরজমিনে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেন্টাল বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, ২০১১সালে প্রতিষ্ঠার পর একদশক পেরিয়ে গেলেও এখনও তেমন কোন অবকাঠামো সুবিধা নেই। এছাড়াও শিক্ষা উপকরণ ও মেডিকেল ইকুইপমেন্টের ঘাটতি রয়েছে। দু’টি ক্লাসরুমে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর থাকলেও এর মধ্যে একটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট রয়েছে। এছাড়াও প্রায় ২০০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য যেখানে অন্তত দশটি ডেন্টাল চেয়ার থাকা প্রয়োজন সেখানে দুটি মাত্র ভাঙাচোরা ডেন্টাল চেয়ার দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে শিক্ষার্থীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা। বৈদ্যুতিক সুইচগুলোও রয়েছে ভাঙাচোরা ও প্রকটিক্যাল করার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলেতে জমে রয়েছে ধুলার মোটা আবরণ।
এছাড়াও পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে অবস্থিত তাদের একমাত্র ছাত্রাবাসের অবস্থা খুবই নাজুক। সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। সেখানে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে এবং খাবার সংরক্ষণের জন্য নেই কোনো রেফ্রিজারেটর। এই সব অসুবিধার কথা কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আকাইদউজ্জামান অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে না চাইলেও পরে তিনি বলেন, “বর্তমানে বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী বাড়ায় তাদের শতভাগ সুযোগ-সুবিধা আমরা দিতে পারছিনা। যে সকল শিক্ষা উপকরণের ঘাটতি রয়েছে সেগুলো মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। সরকারের যতটুকু সাধ্য তা দেয়ার চেষ্টা করবে। তবে ইউরোপ-আমেরিকার মত সুযোগ-সুবিধা শিক্ষার্থীরা দিতে পারব না। চাইলেই সকলকে এসির মধ্যে রাখা সম্ভব নয়। শিক্ষার্থীরা এসি চায় না তারা বৈদ্যুতিক পাখা হলেই চলবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী ফ্যানের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে এরপরও যদি কোথাও লাগে সেগুলো আমরা ব্যবস্থা করে দিব।”
Leave a Reply