এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর নগ্ন ছবি তুলে টাকা দাবির অভিযোগে ছয় কিশোরকে আটক করেছে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ। গতকাল সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের কেদারগঞ্জ ও এর আশপাশের এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলো- শহরের কেদারগঞ্জের মৃত গোলাম হোসেনের ছেলে জোবায়ের হোসেন জীম (১৮), মুন্সিপাড়ার কেতাব আলীর ছেলে মেহেদী হাসান রাকিব (১৭), পলাশপাড়ার আনোয়ারের ছেলে রায়হান রাজ (১৬), কেদারগঞ্জের আশরাফুল ইসলামের ছেলে ইমরান খান (১৬), জীবননগর বাসস্ট্যান্ড পাড়ার মৃত আবু হোসেনের ছেলে সিমরান শেখ (১৬) ও কেদারগঞ্জের মুনছুর আলীর ছেলে মারুফ হাসান আপন (১৬)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, প্রায় ৮ মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে শহরের স্কুলপড়ুয়া এক কিশোরীর (১৪) সঙ্গে জীমে নামে এক কিশোরের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৫ মার্চ জীমসহ আরো বেশ কয়েকজন ওই স্কুলছাত্রীকে মহিলা কলেজপাড়ার একটি বাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এসময় জীম ওই কিশোরীকে ধর্ষণ শেষে তার নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। এ ঘটনায় বাকি আসামিরা জীমকে সহযোগিতা করে।
এরপর থেকেই ধারণকৃত ওইসব অশালীন ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে চাঁদা দাবি করে চক্রটি।
পুলিশ জানায়, ছবি ও ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী মেয়েটির কাছে চাঁদা দাবি করতো চক্রটি। ভয় পেয়ে ওই স্কুলছাত্রী তাদের দাবি মতো টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দিতে বাধ্য হয়। এরই মধ্যে নগদ ১৬ হাজার টাকা ও বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার চক্রটির হাতে তুলে দেয় ওই কিশোরী। গতকাল সোমবার নতুন করে আবারো ২৫ হাজার টাকা দাবি করে অভিযুক্তরা। পরে কোনো উপায়ন্ত না পেয়ে স্কুলছাত্রী পুরো বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়।
পরে পরিবারের সদস্যরা পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৬ জনকে আটক করে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, প্রাথমিক তদন্তে আটকদের ব্যাপারে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ধর্ষণ, পর্নোগ্রাফি ও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তিনি আরো জানান, অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন থেকে ধারণ করা নগ্ন ছবি ও ভিডিও জব্দ করা হয়েছে।
Leave a Reply