সাধন কুমার দাশ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নে নায্যমূল্যের চাল বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সরকার ঘোষিত স্বল্প মূল্যে খাদ্য শস্য বিতরণের আওতায় গরীব ও অসহায় মানুষদের মাঝে ১০ টাকা দরে চাল বিতরণের কথা থাকলেও মূল সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নায্য মূল্যের কার্ড দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সুলভ মূল্যে চাল বিতরণ কার্ডে সুবিধাভোগীর ছবি সহ যাবতীয় তথ্য থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ কার্ডে ছবি পাওয়া যায়নি। যার ফলে একজন সুবিধাভোগীর কার্ড নিয়ে অন্যজন চাল তুলছে। ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের ২৬০০ কার্ড বরাদ্দের তালিকা হলেও কার্ড হাতে পায়নি নির্দিষ্ট সংখ্যক ভুক্তভোগী।
সোমবার (২৫ শে এপ্রিল) সকালে ১১ টায় উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের তামাই গ্রামের আলহাজ্ব হায়দার আলীর বাড়িতে চাল বিতরণ কেন্দ্রে সরেজমিনে প্রতিবেদক উপস্থিত হলে অধিকাংশ সুবিধাভোগীর কার্ডে ছবি পাওয়া যায়নি। কার্ডে ছবি থাকা সাপেক্ষে চাল দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও উক্ত ইউনিয়নে একাধিক চাল বিতরণের স্পটে গিয়ে একই পরিস্থিতি দৃষ্টিগোচর হয়।
তামাই গ্রামের মহিলা বেগম ও সালেহা বেগম নামে ২ জন সুবিধাভোগীর কার্ড নিয়ে চাল নিতে আসছেন রফিকুল ইসলাম নামে একজন ব্যক্তি। কার্ডে উল্লেখিত সুবিধাভোগীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, নায্যমূল্যের চাল বিতরণের কার্ড দিতে চেয়ারম্যানের লোকজন কার্ড প্রতি ২-৩ হাজার টাকা নিয়েছে। কার্ডের জন্য ২ কপি ছবি ও এনআইডি ফটোকপি দেওয়া হয়েছে কিন্তু কার্ডে ছবি সংযুক্ত করা হয়নি। এতে করে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, কার্ডে ছবি না থাকার জন্য সুবিধভোগীদের কার্ড নিয়ে চেয়ারম্যানের লোকজন অন্যলোক দিয়ে চাল তুলে বিক্রি করছে। চেয়ারম্যানের নিকটতম লোকজন এই অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে দাবী স্থানীয় লোকজনের।
তামাই চাল বিতরণ কেন্দ্রের ডিলার ইমরান হোসেন জানান, আমরা সঠিক নিয়ম মেনেই গ্রাহককে চাল দিচ্ছি। তবে কিছু কিছু কার্ডে ছবি নেই সেক্ষেত্রে এনআইডি মিলিয়ে চাল দেওয়া হচ্ছে। কার্ডে ছবি না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কার্ডে ছবি দেওয়ার কথা থাকলেও কেনো ছবি দেওয়া হয়নি আমি এ বিষয়ে জানি না। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান বলতে পারবেন।
এবিষয়ে ৩ নং ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভুঁইয়া এর সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অনিয়মের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। কার্ডে আমরা ছবি দিতে বলছিলাম কিন্তু উপজেলা প্রশাসন থেকে ছবি দেওয়া হয়নি। নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে নিজস্ব কার্ডধারীদের চাল দেওয়ার জন্য। এ ব্যাপারে কোনো অনিয়ম হলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আনিসুর রহমান জানান, নায্যমূল্যের চাল বিতরণে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ নেই। যদি কোনো ডিলার বা জনপ্রতিনিধি অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply