দেশের রংপুর, দিনাজপুর, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও কোথাও হচ্ছে বজ্রসহ বৃষ্টি। এতে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। আবহাওয়া অফিস বলছে, লঘুচাপের প্রভাবে বেড়েছে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা।
আবহাওয়া অফিস ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন মধ্যরাত থেকে রংপুরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে জমে গেছে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি। বৃষ্টির কারণে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন ফসলের। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে আগামী ২-১ দিন থাকতে পারে বৃষ্টি ও মেঘলা আকাশ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে সকাল ৯টা বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৩ মিলিমিটার।
উত্তরাঞ্চলে বইছে হিমেল হাওয়া শীতল বাতাস আর কনকনে ঠান্ডায় ভোগান্তিতে নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে বৃষ্টি কমে গেলেই আসতে পারে উত্তরাঞ্চলে আরো দুইটি মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এ অঞ্চলে তাপমাত্রা কমে ৬ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে বলে জানানো হয়। বাড়তে পারে ঠান্ডার প্রকোপ।
কুড়িগ্রামে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বেড়েছে শীতের প্রকোপ। সকাল থেকে কয়েকঘণ্টা টানা বৃষ্টির কারণে শ্রমজীবী মানুষ কাজে যেতে পারেনি। রাস্তাঘাটে লোক চলাচল ছিল কম। বৃষ্টির কারণে আলু ক্ষেত্রে ছত্রাকের আক্রমণের শঙ্কা দেখা গিয়েছে।
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে যোগাযোগ করে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে ১১ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া একই সময়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মেহেরপুরে দমকা বাতাসের সাথে বৃষ্টি ফসলের ক্ষতির শংকা। সকাল আটটার পর থেকে মেহেরপুরে শুরু হয়েছে দমকা বাতাসের সাথ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। মেঘাছন্ন রয়েছে আকাশ। অসময়ের বৃষ্টিতে ফুল ঝরে গিয়ে নষ্ট হতে পারে গম ও মসুর।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে রাতের দিকে বৃষ্টি কমে গিয়ে আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে পারে। তবে বৃষ্টি কেটে গিয়ে তাপমাত্রা কমে আবারো শৈত্য প্রবাহ আসতে পারে।
কনকনে শীতের মাঝে শুক্রবার ভোর থেকে দিনাজপুরে শুরু হয়েছে বজ্রসহ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। সকাল আটটা পর্যন্ত প্রায় ৯ দশমিক মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরের আবহাওয়া অফিসে। তাপমাত্রা উঠেছে ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে।
সেই সাথে হালকা বাতাসের ঝাপটায় বাড়িয়ে দিয়েছে হাড়কাঁপানো শীতের তীব্রতা। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা শরির বুলিয়ে দিচ্ছে বরফের পরশের মতো অবশ করা ভাব। তবে বৃষ্টির পানির ফোটায় গাছপালা পাতায জমে থাকা এবং প্রকৃতিতে ভাসমান ধুলি কনা অপসরানের ফলে কিছুটা প্রানবন্ত হয়ে উঠবে বিরুপ আবহাওয়ার পরিবেশ।
আবহাওয়া অফিসের পুর্বাভাস অনুযায়ি হালকা বৃষ্টিসহ বজ্রপাত শুরু হয়েছে। সাথে বইছে দমকা বাতাস। এতে জবুথবু ব্যহত জীবনযাত্রা। যোগ হতে পারে কনকনে শীতের তীব্র্রতার মাত্রা।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়েছে এবং শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেছে। সকাল ৯ সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ০৩ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তবে সকাল থেকেই জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর হিম শীতল বাতাসে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে জনজীবনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কাজে যোগ দিতে পারেননি খেটে খাওয়া মানুষ। বিশেষ করে কৃষি শ্রমিক আর রিকশার ভ্যান চালকদের দুর্ভোগ বেশি দেখা যেছে।।
শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেলেও বয়ে যাচ্ছে হিম বাতাস। এতে দিনের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকা এলাকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
এ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি রোববার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর আবারো উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এদিকে বৃষ্টি ও শীত বেড়ে যাওয়ায় আলু, টমেটো ক্ষেতসহ সব ধরণের সবজি ও বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষকরা।
এরমধ্যে ভারী বৃষ্টিতে অনেক এলাকায় জমেছে পানি। এতে ভোগান্তি ও দুর্ভোগে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ। আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুসারে, ভোর ৬ টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয় রাজশাহীর তাড়াশে।
Leave a Reply