ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাস্তা নামারহাটি এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে দুই ভাই মিলে বড় ভাইকে হত্যা ছাড়াও একই দিনে ওই থানার চুনকটিয়া থেকে নৌকার মাঝি ও বুড়িগঙ্গা নদী থেকে অজ্ঞাত বৃদ্ধের লাশ সহ মোট তিন লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
পারিবারিক কলহের জেরে ভাইদের হাতে নিহতের নাম আব্দুল জলিল (৪৫), সে বাস্তা ইউনিয়ন এর রাজাবাড়ী নামারহাটি এলাকার মৃত হাজী কানু মিয়ার ছেলে।
শুক্রবার ভোর রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আব্দুল জলিলকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,আব্দুল জলিলের আপন দুই ছোট ভাই আলমগীর হোসেন (৪০) ও জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৭)। তারা রাজাবাড়ি নামারহাটি পৈত্রিক বাড়িতে একই সাথে বসবাস করত। গত বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিক কলহে ঝগড়া বিবাদ শুরু হলে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে মেজো ভাই আলমগীর হোসেন ও ছোট ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন মিলে বড় ভাই আব্দুল জলিল এর বুকে ও তলপেটে কিল ঘুষি মারে। এতে হঠাৎ করে বড় ভাই জলিল অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় ছোট দুই ভাই পালিয়ে যায়।
এছাড়াও মণীন্দ্রচন্দ্র(৬৫) নামের এক ব্যক্তিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন চুনকুটিয়া চৌধুরী পাড়া এলাকায় শুক্রবার ভোর রাতে কে বা কারা ছুরিকাঘাত করে রাস্তায় ফেলে যায়। পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহত মণীন্দ্র চন্দ্রের(৬৫) লাশ উদ্ধার করে। সে শুভাঢ্যা ইউনিয়নের ঋষিপাড়া এলাকায় মরণ চন্দ্রের ছেলে। মণীন্দ্র চন্দ্র দীর্ঘদিন যাবৎ বুড়িগঙ্গায় তেলঘাট এলাকায় নৌকার মাঝি হিসাবে কাজ করতো।
এদিকে শুক্রবার সকাল ১১ টায় পোস্তগোলা হাসনাবাদ কবরস্থানের পার্শ্ববর্তী বড় মসজিদ ঘাট এলাকায় অজ্ঞাত (৬০) এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে হাসনাবাদ নৌ পুলিশ ফাঁড়ি। হাসনাবাদ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোশাররফ হোসেন জানান, ট্রিপল নাইন এর মাধ্যমে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। এসময় নিহতের গায়ে আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, নৌকার মাঝি মনীন্দ্র চন্দ্র হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে আমরা কিছু সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করেছি, তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। সুরতহাল শেষে নিহতের শরীরে ৬টি ছুরির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। নিছক ছিনতাইয়ের ঘটনা হলে এতগুলো ছুরির আঘাত করা হতো না বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তাই বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। এছাড়াও রাজাবাড়ী এলাকায় পারিবারিক কলহে ভাইদের আঘাতে একজন খুন হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত দুই ভাই পলাতক থাকায় তাদেরকে এখনও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুটি হত্যা ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply