বিশ্বজুড়ে আলোচিত ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে প্রণীত টাইম ম্যাগাজিনের ‘১০০ মোস্ট ইনফ্লুয়েনশিয়াল পিপল ২০২৫’ তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি ‘নেতা’ বিভাগে জায়গা পেয়েছেন। এই তালিকায় ড. ইউনূসের পাশাপাশি রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া সেইনবোম, এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক।
ড. ইউনূসের এই স্বীকৃতিকে ঘিরে টাইম ম্যাগাজিনে বিশেষ মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। তিনি বলেন, ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন এক অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, এক পরিচিত নেতা—নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস গণতন্ত্রের দিকে দেশকে এগিয়ে নিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়নে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষকে তিনি নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে, পরিবারকে রক্ষা করতে এবং মর্যাদা ফিরে পেতে সহায়তা করেছেন। এই ঋণগ্রহীতাদের ৯৭ শতাংশই নারী।
হিলারি ইউনূসের সঙ্গে নিজের প্রথম সাক্ষাতের কথাও স্মরণ করেন। জানান, আমি ইউনূসের সঙ্গে প্রথম দেখা করি যখন তিনি আরকানসাসে এসে তৎকালীন গভর্নর বিল ক্লিনটন এবং আমাকে ক্ষুদ্র ঋণের অনুরূপ একটি প্রোগ্রাম চালু করতে সহায়তা করেন। এরপর থেকে আমি বিশ্বের যেখানেই গিয়েছি, সেখানেই তার কাজের অসাধারণ প্রভাব দেখতে পেয়েছি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের জন্য বর্তমান সময়ে যে ভূমিকা রাখছেন সে প্রসঙ্গ টেনে হিলারি বলেন, ইউনূস আবারও নিজের দেশের ডাকে সাড়া দিয়েছে। তিনি বাংলাদেশকে নিপীড়নের ছায়া থেকে বের করে আনছেন, মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করছেন এবং একটি ন্যায়ভিত্তিক ও স্বাধীন সমাজের ভিত্তি গড়ে তুলছেন।
ড. ইউনূসের এই অন্তর্ভুক্তি শুধু বাংলাদেশের জন্যই গর্বের নয়, বরং বিশ্বের অর্থনৈতিক সাম্য ও মানবিক উন্নয়নের পথে তার অবদানের এক অনন্য স্বীকৃতি।
Leave a Reply