ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে মর্যাদার লড়াইয়ের ম্যাচে নতুন বিতর্কে জড়ালেন সাকিব আল হাসান। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত না দেয়ায় লাথি দিয়ে স্টাম্প ভেঙেছেন টাইগার অলরাউন্ডার। ঘটনা সেখানেও থামেনি, এরপর মাঠের বাইরে আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদের সাথেও জড়ান বিতণ্ডায়।
একটি এলবিডব্লুর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার ইমরান পারভেজ। সাকিব আল হাসান তাতেই হারিয়ে ফেলেন মেজাজ। বিতণ্ডায় জড়ান, লাথি দিয়ে ভাঙেন স্টাম্প।
শুক্রবার দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে মুখোমুখি হয় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং।
প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে ব্যাট হাতে সময়টা ভালো যাচ্ছে না সাকিবের। তবে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে ইংগিত দেন ছন্দে ফেরার। ব্যাট হাতে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ করেন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব। ১৪৬ রানের টার্গেটে শুরুতে কিছুটা এলোমেলো হয় আকাশী-নীলরা। ৯ রানে তিন টপ অর্ডারের বিদায়ের পর হাল ধরেন নাজমুল শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। ব্যক্তিগত ১২ রানে মুশফিকের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর আবেদন করেন সাকিব। আম্পায়ার তাতে সাড়া না দেয়াতে মেজাজ হারান এই অলরাউন্ডার। এরপর বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে যায় খেলা।
ঘটনাটা আবাহনী ইনিংসের পঞ্চম ওভারে। মুশফিকুর রহিমের বিপক্ষে নিজের বোলিংয়ে এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গেই লাথি মেরে স্টাম্প ভাঙেন সাকিব। পরের ওভারেই শুভাগত হোমের বোলিংয়ের সময় বৃষ্টি নামলে আম্পায়ার খেলা বন্ধ করার ঘোষণা দিলে সাকিব আবার নিজের হাতে স্টাম্প উপড়ে ফেলেন।
তবে ঘটনাটি স্টাম্প ভাঙা আর আম্পায়ারের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়েই শেষ হয়নি। এর দ্বিতীয় অংশে মঞ্চে আবির্ভূত হন আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ। আবাহনীর ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে তুমুল বৃষ্টি নামলে আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান খেলা বন্ধ ঘোষণা করেন। তিনি যখন মাঠকর্মীদের কাভার আনার ইশারা দিচ্ছেন, তখন সাকিব আম্পায়ারের দিকে এগিয়ে গিয়ে তিনটি স্টাম্পই তুলে উইকেটের ওপর ছুড়ে মারেন। তিনি এ সময় আম্পায়ারকে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু একটা বলছিলেন।
এরপর দৃশ্যপটে প্রবেশ করেন খালেদ মাহমুদ। খেলোয়াড়েরা যখন মাঠ ত্যাগ করছিলেন, তখনো নিজেকে সামলাতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল সাকিবের। তিনি এ সময় আবাহনীর ড্রেসিংরুমের দিকে তাকিয়ে কিছু বললে খেপে গিয়ে তেড়ে আসেন কোচ খালেদ মাহমুদ। এগিয়ে যান সাকিবও। মোহামেডানের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার তখন জাপটে ধরে থামান সাকিবকে। খালেদ মাহমুদকেও থামান মোহামেডানের শামসুর রহমান।
পরে অবশ্য পুরো ব্যাপার মিটে যায়। সাকিব আবাহনীর ড্রেসিংরুমে গিয়ে ক্ষমা চান মাহমুদের কাছে। মাহমুদও তাঁকে জড়িয়ে ধরে ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটান।
এই ঘটনার আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে মোহামেডান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে স্কোরবোর্ডে তোলে ১৪৫ রান। সর্বোচ্চ ৩৭ রান (২৭ বলে) করেন সাকিবই। মাহমুদুল হাসান ২২ বলে ৩০ করে অপরাজিত থাকেন। আবাহনীর পক্ষে এ কে এস স্বাধীন ২৪ রানে ৩ উইকেট নেন, ১৭ রানে ২ উইকেট নেনে তানজীম হাসান সাকিব।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ের মুখেই ছিল আবাহনী। ২.৩ ওভারে ৯ রানে ৩ উইকেট হারায় তারা। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে উইকেটে ছিলেন নাজমুল হোসেন ও মুশফিকুর রহিম। আবাহনীর সংগ্রহ ছিল ৫.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ৩১।
Leave a Reply