করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারে বিরাম নেই চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের। কিন্তু এখনো অব্যর্থ কোনো ওষুধের সন্ধান পাননি তারা। তাই আপৎকালীন এই সময়ে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে ইতোপূর্বে অন্য রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা চার-পাঁচটি ওষুধে। সেগুলো ব্যবহার করে অনেকাংশেই সফলতা পেয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও ওষুধগুলোর প্রয়োগের ওপর নজর রাখছে, অবশ্য এখনও স্বীকৃতি দেয়নি।
অনেক ওষুধ আছে যেগুলো একটি নির্দিষ্ট রোগের জন্য হলেও প্রায় কাছাকাছি অন্য রোগের ক্ষেত্রেও কাজ করে থাকে। করোনায় আক্রান্ত রোগীকে বাঁচাতে সেভাবেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে মনে রাখা দরকার, সবগুলোই এখনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে আছে, কোনোটারই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মেলেনি।
চীন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় চীন সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে জাপানি প্রতিষ্ঠান ফুজিফিল্ম তোয়ামা ক্যামিক্যালের তৈরি ইনফ্লুয়েঞ্জার ওষুধ ‘অ্যাভিগান’ থেকে। চীনের জাতীয় বায়োটেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক ঝাং জিনমিন বলেছেন, করোনা চিকিৎসায় অ্যাভিগান খুব নিরাপদ ও স্পষ্টভাবে কার্যকর। এছাড়া চীন এই মহামারির চিকিৎসায় ইতোমধ্যে তাদের ঐতিহ্যবাহী ভেষজ ওষুধও প্রয়োগ করেছে। দেশটি কিউবার তৈরি হেপাটাইটিস বি ও সি’র ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ‘ইন্টারফেরন আলফা টু বি’ ওষুধটিও ব্যবহার করেছে ।
ইউরোপ
করোনায় টালমাটাল অবস্থা ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের। প্রাণঘাতী এই মহামারির চিকিৎসায় তারা ব্যবহার করছে এইডসের ওষুধ ‘লোপিনাভির ও রিটোনাভির’ এর সংমিশ্রণ। এতে তারা উল্লেখযোগ্যহারে সফলতা পেয়েছে।
ভারত
করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে ভারতে। এই মরণব্যাধির চিকিৎসা তারা প্রয়োগ করছে ম্যালেরিয়ার ওষুধ ‘হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন’। এতে তারা বেশ সাফল্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এমনকি কার্যকর প্রমাণ হওয়ার প্রেক্ষিতে তারা ওষুধটির রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। যদিও পরে আবার তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র
পৃথিবীতে এর আগে প্রায় সব মহামারির চিকিৎসায় কার্যকর পদ্ধতি ছিল প্লাজমা থেরাপি। এই পদ্ধতিতে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠা কারো রক্ত একই ভাইরাসে আক্রান্ত অন্য ব্যক্তির শরীরে সঞ্চালন করা হয়। করোনার চিকিৎসায়ও তারা এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে সাফল্য পেয়েছেন।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে করোনার চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত প্রয়োগ করা হয়েছে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন। একইসঙ্গে জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল, ঠাণ্ডা-সর্দিতে ফেক্সোফেনাডিন ও শ্বাসকষ্টে অক্সিজেন ছাড়াও নির্ধারিত ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে।
Leave a Reply