ডেস্ক নিউজ: দিনাজপুর সদর থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাককে বহিষ্কার করেছে জেলা কমিটি। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
গতকাল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল দিনাজপুর জেলা শাখার সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহজালাল সাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিজেকে পুলিশের ওসি পরিচয় দিয়ে বাবা-ছেলেকে জিম্মি করে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করায় কোতোয়ালি থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ দুজনকে আটক করে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে জনতা। বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুর পাড় নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় চৈতু বর্মন নামের এক ভুক্তভোগী গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বাদী হয়ে ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাকসহ ৮জনের নাম উল্লেখসহ ২ থেকে ৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে দিনাজপুর কোতয়ালি থানায় মামলা করেন।
এজাহারে উল্লেখিত অন্যান্য আসামিরা হলেন মো. আপেল, মো. শাহীনুর ইসলাম, মো. শান্ত, মো. আক্তারুল, শ্রী উজ্জ্বল রায়, শ্রী তাপস রায় এবং শ্রী মহেশ চন্দ্র রায়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মামলার বাদী চৈতু বর্মনের ছেলে ইমন চন্দ্র বর্মণ (২২) একই গ্রামের মিতু রানী রায়ের (১৯) সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়ে বিবাহ হয় এবং তারা টাঙ্গাইলে থাকে। এই ঘটনার জের ধরে গত ৭ জানুয়ারি কোতয়ালি থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন মাইক্রোবাস নিয়ে রাত পোনে ১২টায় দিনাজপুর সদরের ৪ নম্বর শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামে গিয়ে শ্রী চৈতু চন্দ্র বর্মণকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। এ সময় আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে কোতোয়ালি থানার ওসি পরিচয় দেন। এ সময় চৈতু চন্দ্র বর্মণকে জিজ্ঞাসাদ করে ছেলের জানেন তারা। টাঙ্গাইল থেকে ছেলে ইমনসহ চৈতুকে নিয়ে৮ জানুয়ারি রাত ১০টায় পুনরায় দিনাজপুর ৪ নম্বর শেখপুড়া ইউনিয়নের মাধবপুর গোয়ালপাড়া নামক স্থানে নিয়ে শ্রী মহেশ চন্দ্র রায় নামের এক ব্যক্তির বাসায় আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
এজাহার থেকে আরও জানা যায়, চৈতু তাদের টাকা দিতে স্বীকার করে একদিনের সময় চাইলে আব্দুর রাজ্জাক ও তার লোকজন টাকা না দিলে বা কাউকে জানাজানি করলে বিভিন্ন মামলাসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেন। পরে ওই রাতেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তার লোকজন মো. আপেল চৈতু ও তার ছেলেকে ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুর পাড়ে ডেকে নেয় এবং পুনরায় আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে ওসি পরিচয় দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করে। এ সময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে রাজ্জাকসহ দুজনকে আটক করে। পরে পুলিশে খবর দিয়ে তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান বলেন, জাতীয় জরুরি সেবায় কল পেয়ে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
Leave a Reply