আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক মানুষে প্রাণহানি হয়েছে। জেজু এয়ারের একটি বিমান রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে ১৮১ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয়। এদের মধ্যে মাত্র দুজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দেশটির দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের দেয়ালের সাথে সংঘর্ষ হয় বিমানটির। এ সময় বিমানটিতে মোট ১৭৫ জন যাত্রী ও ছয় জন ক্রু ছিলো। যাত্রীদের মধ্যে ১৭৩ জন দক্ষিণ কোরিয়ার আর দুজন থাই নাগরিক। বিমানটি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে ফেরত গিয়ে বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে বিমানের ভেতর থাকা এক যাত্রী দুর্ঘটনার আগমুহূর্তে তার আত্মীয়কে বার্তা পাঠান। ওই বার্তায় তিনি বিমানের ডানায় একটি পাখি আটকে থাকার কথা জানান। তিনি বলেন, আমরা অবতরণ করতে পারছি না। এই মুহুর্তে আমি কী (মৃত্যুর আগে) শেষ বার্তা দিয়ে যাব?”
সকাল ৯টার দিকে এমন বার্তা দেখতে পেয়ে ওই যাত্রীর আত্মীয় তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু তার কাছ থেকে আর কোনো সাড়া পাননি। তিনি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন, সেটিও এই আত্মীয় আর জানেন না।
মুয়ান ফায়ার বিভাগের প্রধান লি জিয়ং-হুন জানিয়েছেন, তাদের ধারণা পাখির আঘাতে অথবা খারাপ আবহাওয়ার কারণে হয়ত বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, “দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে পাখির আঘাত অথবা খারাপ আবহাওয়াকে ধারণা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর যৌথ তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তীতে দুর্ঘটনার কারণ জানানো হবে। “
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয় বলেছে, কন্ট্রোল টাওয়ার দুর্ঘটনার আগে বিমানে পাখির আঘাতের সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল। আর থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ছেড়ে যাওয়ার সময় বিমান এবং রানওয়ে উভয় ক্ষেত্রেই কোনো অস্বাভাবিক অবস্থার খবর পাওয়া যায়নি।
এয়ারলাইন জেজু এক বিবৃতিতে এই দুর্ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুয়ান এয়ারপোর্টের দূর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সবার কাছে আমরা অবনত মস্তকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমরা যা যা করার দরকার সব করবো। এই কষ্টের জন্য আমরা দু:খিত।
দেশটির দমকল বিভাগের ধারণা পাখির আঘাত এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণেই এই দুর্ঘটনা হতে পারে। তবে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের প্রধান লি জিয়ং-হুন। এছাড়া মুয়ান বিমানবন্দর থেকে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
দূর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চই স্যাং-মক। তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে যে তিনি উদ্ধার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল, উপকরণ ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। দেশটির প্রেসিডেন্টকে ঘিরে চলমান রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে শুক্রবারই তিনি দেশটির অন্তর্বর্তী নেতা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।
Leave a Reply