খেলা ডেস্ক: ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দুই ম্যাচেই অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল বাংলাদেশ। আশা ছিল, সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে ঘুরে দাঁড়াবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। তবে এখানেও সেই একই দশা। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৭উইকেটে হার দেখল বাংলাদেশ।
গোয়ালিয়রের শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারের ১ বল বাকি থাকতে ১২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৭ উইকেট ও ৪৯ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিক ভারত। এই জয়ে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সূর্যকুমার যাদবের দল।
১২৮ রানের লক্ষ্যে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ভারত। দলের কেউই তেমন বড় স্কোর গড়তে না পারলেও ছোট ছোট ব্যবধানে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দল। ওপেনিংয়ে নেমে ৭ বলে ১৬ রান করেন অভিষেক শর্মা। ১৯ বলে ২৯ রান আসে সাঞ্জু স্যামসনের ব্যাটে। তিনে নেমে অধিনায়ক সূর্যকুমার খেলেন ১৪ বলে ২৯ রানের ইনিংস। ৮০ রানে ৩ উইকেট হারানো ভারতকে আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি হার্দিক পান্ডিয়া ও নীতীশ কুমার রেড্ডি। বিস্ফোরক ইনিংসে ১৬ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন হার্দিক। আরেক পাশে ১৫ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন নীতীশ।
বাংলাদেশের কোনো বোলারই ভারতীয় ব্যাটারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেননি। ১ উইকেট নেওয়া মোস্তাফিজ ৩ ওভারে দিয়েছেন ৩৬ রান। মিরাজ ১ ওভারে ৭ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। আর অভিষেক হয়েছেন রানআউট।
এদিন ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ভারতের বোলারদের তোপে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই লিটন কুমার দাসকে হারায় বাংলাদেশ। আরশদীপ সিংয়ের বলে মেরে খেলতে গিয়ে ত্রিশ গজের মধ্যেই বল উঠিয়ে দেন লিটন। ক্যাচ ধরতে কোনো ভুল করেননি রিংকু সিং। দলীয় তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে আবারও আরশদীপের আঘাত। এবার পারভেজ হোসাইন ইমনকে সরাসরি বোল্ড করেন তিনি।
পাওয়ার প্লেতে আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়। তবে ষষ্ঠ ওভারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রথম ওভারেই মেডেন আদায় করে নেন মায়াঙ্ক যাদব। সপ্তম ওভারেই ফেরেন হৃদয়। বরুন চক্রবর্তীর বলে তেড়েফুড়ে খেলতে গিয়ে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৮ বলে মাত্র ১২ রান আসে এই ডানহাতির ব্যাটে। পাঁচে নামা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টিকেছেন মাত্র ২ বল। মায়াঙ্কের বলে ওয়াশিংটন সুন্দরকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। একাদশে ফেরা জাকের আলিও ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। বরুনের বলে সরাসরি বোল্ড হয়েছেন তিনি। ৫৭ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে এক শ’র নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ।
ষষ্ঠ উইকেটে ১৮ রান যোগ করেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ৭৫ রানে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়কও। ২৫ বলে ২৭ রান করে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে ফেরেন তিনি। উইকেটে নেমে চার-ছক্কায় শুরু করে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন রিশাদ হোসেন। তবে ৫ বলে ১১ রান করে বরুন ধাওয়ানের শিকার হন তিনি। এক শ’র আগেই ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অষ্টম উইকেটে ২৩ রান যোগ করেন মিরাজ ও তাসকিন আহমেদ। দলীয় ১১৬ রানে তাসকিনের (১৩ বলে ১২) পতনের এক রান পরেই ফেরেন শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ৩২ বলে ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। ইনিংসের ১ বল বাকি থাকতে ১২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
ভারতের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে সফল পেসার আরশদীপ সিং। ৩ ওভার ৫ বল করে মাত্র ১৪ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। ৩ উইকেট নেওয়া বরুন ৪ ওভারে দেন ৩১ রান। একটি করে উইকেট শিকার করেন হার্দিক পান্ডিয়া, মায়াঙ্ক যাদব ও ওয়াশিংটন সুন্দর।
Leave a Reply