ধর্ম ডেস্ক: প্রত্যেক মুসলিমের জন্য নামাজ অন্যতম ফরজ ইবাদত। মেরাজের রাতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা উম্মতে মুহাম্মদীর ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেন। পবিত্র কুরআনেও এ বিষয়ে জোড় তাগিদ দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের প্রতি যে কিতাব নাজিল করা হয়েছে, তা থেকে তিলাওয়াত করো এবং সালাত (নামাজ) কায়েম করো। নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহ’র স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা করো। (সুরা আনকাবুত: আয়াত: ৪৫)
এ ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের তাদের সন্তানদের বাল্যকাল থেকেই নামাজের বিষয়ে তাগিদ দেয়ার কথাও হাদিসে এসেছে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট বয়সে উপনীত হওয়ার পরও সন্তান নামাজ আদায় না করলে কড়াকড়ির বিষয়েও বলা হয়েছে। আমর ইবনু শুআয়েব (রহ.) থেকে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমাদের সন্তানেরা ৭ বছরে উপনীত হবে, তখন তাদের নামাজ পড়ার নির্দেশ দেবে এবং তাদের বয়স যখন ১০ বছর হবে, তখন নামাজ না পড়লে এজন্য তাদের মারপিট করো এবং তাদের (ছেলে-মেয়েদের) বিছানা পৃথক করে দেবে। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৫)
এ জন্য ছোটবেলা থেকেই নামাজের শিক্ষা দিতে আমাদের মধ্যে অনেকেই সন্তানদের মসজিদে নিয়ে যাই। বিশেষ করে জুমার দিনে মসজিদে শিশুদের উপস্থিতি লক্ষণীয়। তবে শিশুরা মসজিদে এলে প্রায়সময়ই চেঁচামেচি, হৈ-হুল্লোড় কিংবা কান্নাকাটি করে। এতে অন্য মুসল্লিদের মনোযোগ ও ইবাদতে সমস্যা তৈরি হয় দেখে মুরুব্বিদের অনেকেই বাচ্চাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। কখনো কখনো রেগে গিয়ে অনেকেই আবার শিশুদের ধমকও দেন। আবার অনেকে মনে করেন, কাতারের মধ্যে বাচ্চাদের নিলে নামাজ ত্রুটিযুক্ত হয়। তবে হাদিস অনুযায়ী, বাচ্চাদের মসজিদে নেয়ার ক্ষেত্রে বাধা নেই।
আবূ ক্বাতাদাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে লোকজন নিয়ে সালাত (নামাজ) পড়াতে দেখেছি। এমতাবস্থায় তাঁর নাতনি উমামাহ্ বিনতু আবুল-আস তাঁর কাঁধে থাকতো। তিনি (রাসুল সা.) যখন রুকুতে যেতেন উমামাহ্কে নিচে নামিয়ে রাখতেন। আবার যখন তিনি সিজদাহ থেকে মাথা উঠাতেন, তাকে (উমামাহ্) আবার কাঁধে উঠিয়ে দিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৫৭০, মেশকাত, হাদিস: ৯৮৪)
তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেন শিশুদের কারণে কারও সালাতে সমস্যার সৃষ্টি না হয়। এ ক্ষেত্রে যদি শিশু নাবালেগ হয়, তবে তাকে বড়দের কাতারেই একসঙ্গে দাঁড় করানো যাবে। এতে বড়দের নামাজের কোনো সমস্যা হবে না। আর যদি একাধিক শিশু হয়, সে ক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্তবয়স্কদের পেছনে আলাদা কাতারে দাঁড় করানো সুন্নাত। তবে হারিয়ে যাওয়া কিংবা দুষ্টুমি করার আশঙ্কা থাকলে শিশুদেরকে বড়দের কাতারের মধ্যেও দাঁড় করানো যাবে। (আলবাহরুর রায়েক, ১৬১৮, আদ্দুররুল মুখতার, ১৫৭১)
Leave a Reply