কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) : ঢাকার কেরানীগঞ্জে অ্যালকোহল সেবন করে তিন যুবক অসুস্থ হলে তাদের মধ্যে দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার ঈদের দিন দিবাগত রাত এগারোটার দিকে কেরানীগঞ্জ উপজেলার কোন্ডা ইউনিয়নের বীর বাঘৈর এলাকার ইউনুস মিয়ার বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বীর বাঘৈর এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ ফয়সাল তার তিন বন্ধু তানভীর হোসেন (১৮), মুস্তাকিম (১৯) ও তন্ময় (১৮) কে তাদের বাসার তৃতীয়তলা ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে ফয়সাল তার তিন বন্ধু তানভীর মুস্তাকিম ও তন্ময় কে জুসের সাথে অ্যালকোহল মিশিয়ে সেবন করতে দেয়। একপর্যায়ে তারা সেবনকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য তাদেরকে ছাদের একটি ঘরে আটকে রাখে।
মৃত মুস্তাকিম বাঘৈর এলাকার আরশ আলীর একমাত্র ছেলে এবং তানভীর একই এলাকার বাছেদ মিয়ার একমাত্র ছেলে এবং গুরুতর আহত তন্ময় মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
অসুস্থ তিন যুবকের পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রথমে পুরান ঢাকার আজগর আলী জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল ও পরে মিডফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার রাতে মুস্তাকিম ও মঙ্গলবার দুপুরে তানভীর মারা যান। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় তন্ময় রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মঙ্গলবার মারা যাওয়া তানভীরের লাশের ময়না তদন্ত শেষে বুধবার বিকালে তার নিজ বাড়ীতে দাফন করার জন্য নিয়ে আসা হলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে নিহত তানভীরের মা পাগল প্রায়। সে না কেঁদে হাসছেন আর বারবার মুছার্ যাচ্ছেন।
ভিডিও দেখতে লাল লেখায় ক্লিক করুন
মৃত মুস্তাকিম ও তানভীর এর স্বজনরা সাংবাদিকদের জানান, পরিকল্পিতভাবে ইফনুস মিয়ার ছেলে ফয়সাল বন্ধুদের ঈদের ছুটিতে আড্ডা দেয়ার নামে তাদেরকে পরিকল্পিতভাবে অ্যালকোহল পান করিয়ে হত্যা করেছে। তারা ইউনুস মিয়া ও তার ছেলে ফয়সালের বিচার দাবী করেছেন।
দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মামুনুর রশিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত তানভীরের বাবা বাছেদ মিয়া বাদী হয়ে আজ থানায় মামলা করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply