দেশে সম্প্রতি ত্রাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নিয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি এবং অক্সফামের এক জরিপ বলছে, সামগ্রিকভাবে ত্রাণ পায়নি ৭৬.৬ ভাগ মানুষ। দরিদ্রদের মধ্যে পায়নি ৭৫.২ ভাগ। আর ত্রাণ পাওয়াদের মধ্যে ৪৪ ভাগই অবস্থাসম্পন্ন। এছাড়া খাদ্য সহায়তা পায়নি ৫০ ভাগ অতিদরিদ্র।
চলমান ত্রাণ কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত মাত্র ১ দশমিক ৬ ভাগ সুবিধাভোগী। এ ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার এবং প্রচারের সীমাবদ্ধতা মূল কারণ বলছেন গবেষকরা।
করোনা মহামারিতে আয় কমেছে বহু মানুষের। পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী আরও পিছিয়েছে। আগে দারিদ্র সীমার ওপরে থাকলেও মহামারি শুরুর পর নেমে এসেছে দরিদ্রের তালিকায়। দূর্ভোগে পড়া লোকজনকে সহায়তায় ভিজিএফের চাল, নগদ টাকাসহ নানা ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে সরকার।
তবে, সরকারের দেয়া এই ত্রাণ সহায়তা পায়নি দেশের প্রায় ৭৭ ভাগ মানুষ। আর অতিদরিদ্রদের মধ্যে কোনো সহায়তা পাননি ৭৫ ভাগের বেশি মানুষ। ২ হাজার ৬০০ খানা জরিপ করে এ তথ্য দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি এবং অক্সফাম।
এদিকে, করোনার কারণে গত বছর চাল সংগ্রহ কম হওয়ায়, বর্তমানে নগদ সহায়তা বেশি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। এখন পর্যন্ত যথাযথভাবেই ত্রাণ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
করোনা মহামারির কারণে আয় কমে যারা নতুন করে দারিদ্র্যসীমায় ঢুকেছেন, তাদের সিংহভাগ সরকারি সহায়তার বাইরে রয়ে গেছে। আবার যারা হতদরিদ্র, তাদের একটি বড় অংশও সহায়তা পাননি। সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে তারা জানতেনও না।
সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ সময় সরকার এককালীন আড়াই হাজার টাকা, ত্রাণ হিসেবে নগদ টাকা এবং চাল দিয়েছে। দেশের সবচেয়ে দরিদ্র যে ২৫ শতাংশ মানুষ, তার মধ্যে শুধু এক-চতুর্থাংশ এসব সুবিধা পেয়েছেন। তিন-চতুর্থাংশ মানুষ সরকারের কোনো কর্মসূচি থেকে সহায়তা পাননি।
করোনাকালে বিভিন্ন হটলাইন সুবিধা চালু করে সরকার যে সহায়তার চেষ্টা করছে, সেটির প্রচার খুব একটা হয়নি বলেও জানান তিনি। সিপিডি জেনেছে, মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ সরকারি হটলাইন সম্পর্কে জানতেন।
প্রান্তিক পর্যায়ে ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিতে তথ্য হালনাগাদ এবং সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন পক্ষকে সম্পৃক্ত করার তাগিদ বিশ্লেষকদের।
Leave a Reply