ডেস্ক নিউজঃ ‘হ্যালো এবং বিবিসি ইন্টারন্যাশনাল নিউজে স্বাগতম। আসুন আজকের শিরোনাম দেখে নেয়া যাক,’ হুউ এডওয়ার্ডস শুরু করেন, যিনি গত জুনে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিবিসি’র সংবাদ ‘নিউজ এট টেন’ উপস্থাপন করেছেন। অনেকের কাছে তিনি পরিচিত মুখ। কিন্তু এখানে নতুন ঘটনার জন্ম নিয়েছে, তিনি এখন বাংলায় কথা বলছেন।
এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ইউটিউব জুড়ে এমন অসংখ্য ছদ্মবেশী চ্যানেল রয়েছে যেগুলো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের আদলে লোগো, সংবাদ উপস্থাপক এবং এমনকি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকসহ সম্পূর্ণ অনুকরণ করে সংবাদ পরিবেশন করছে।
ছদ্মবেশীদের বিরুদ্ধে ইউটিউবের নীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। প্ল্যাটফর্মটি এসব চ্যানেলকে যাচাইবাছাই ছাড়াই হোস্টিং করছে। উল্টো অতি প্রতীক্ষিত ‘ভেরিফায়েড ব্যাজ’ পর্যন্ত পেয়ে যাচ্ছে ভুয়া এমনসব চ্যানেল। বিজ্ঞাপনও চলছে এই চ্যানেলগুলোতে। যার মানে হচ্ছে তারা এসব প্ল্যাটফর্মসহ এর অসাধু কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের মুনাফাও এনে দিচ্ছে৷
দেশি-বিদেশি স্বনামধন্য চ্যানেলের নাম ও লোগো ব্যবহার করে ইউটিউবে চলছে বিভিন্ন চ্যানেল। এরকম ৫৮টি ভুয়া চ্যানেলের তথ্য হাতে পেয়েছে স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং অরাজনৈতিক অনলাইন ভেরিফিকেশন ও মিডিয়া গবেষণা প্লাটফর্ম ডিসমিসল্যাব। গবেষণা শেষে এমন তথ্য জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে প্রচার করা হয় বিভিন্ন বিকৃত তথ্য। ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি, সিএনএন এবং আল জাজিরার আদলে এসব কপিক্যাট চ্যানেলগুলো বাংলায় শত শত কন্টেন্ট আপলোড করে এবং এগুলোর কারো কারো এক মিলিয়নেরও (১০ লাখ) বেশি গ্রাহক (সাবস্ক্রাইবার) রয়েছে।
কিন্তু এখানে তুলে ধরা হলো চুম্বক অংশ। ১৪টি ভুয়া চ্যানেলের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভিডিওর থাম্বনেইলে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
এতে দর্শকদের বিভ্রান্ত করার পাশাপাশি লঙ্ঘন করা হয়েছে ইউটিউবের নীতিমালা।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকরা সতর্ক করেছেন, এই ভুয়া চ্যানেলগুলো শুধুমাত্র বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ থেকে দর্শকদের সরিয়ে নিচ্ছে না, সেই সঙ্গে সত্য এবং কল্পকাহিনীর মধ্যকার বিভাজন রেখাকেও অস্পষ্ট করে তুলছে এবং বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদনের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন অনেকে।
ইউটিউবে কয়েক ডজন ‘ভুয়া বিবিসি’
এই সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউটিউবে বিবিসি’র কপিক্যাট চ্যানেলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ব্রিটিশ রাষ্ট্রীয় এই সংবাদমাধ্যমটির কমপক্ষে ৩৭টি নকল ও ভুয়া চ্যানেল বীরদর্পে পরিবেশন করে যাচ্ছে সংবাদ। চ্যানেলগুলো নিখুঁতভাবে বিবিসির ব্র্যান্ডিং নকল করে থাকে এবং এদের গড়ে ৫৪ হাজার করে সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড়টি ‘আন্তর্জাতিক সংবাদ’ (ইন্টারন্যাশনাল নিউজ)-এর ভ্যারিফাইড স্ট্যাটাস রয়েছে যার সাবস্ক্রাইবার এক মিলিয়ন বা ১০ লাখ।
ছয়টি চ্যানেল হুবহু বিবিসির কনটেন্টের আদলে ভিডিও তৈরি করে। সেই সঙ্গে এর স্টুডিওর নান্দনিকতা, গ্রাফিক্স এবং সংবাদ উপস্থাপকের অবিকল কনটেন্ট সম্প্রচার করে। যেখানে জনপ্রিয় সংবাদ উপস্থাপক হু এডওয়ার্ডস কথা বলছেন তবে সাবলিলভাবে বাংলায়।
বিবিসিকে নকল করা ভুয়া চ্যানেলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিবিসি ওয়ার্ল্ড লাইভ, বিবিসি নিউজ 24, বিবিসি ওয়ার্ল্ড টিভি, বিবিসি ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, এবং বিবিসি নিউজ বাংলা (বিবিসি নিউজ বাংলা)।
প্রতিটি চ্যানেল শুধুমাত্র বিবিসি-এর নাম ব্যবহার করেনি, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির লোগো নিজেদের ব্র্যান্ডিং, প্রোফাইলে ব্যবহার করেছে। যাইহোক, বিবিসির শর্তাবলী কঠোরভাবে এর পরিষেবাগুলোর প্রতিলিপি বা অনুকরণ নিষিদ্ধ করে। একইসঙ্গে অনুমতি ছাড়াই এর ব্র্যান্ড, ট্রেডমার্ক বা লোগো ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে এই সব শর্তাবলীকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে ভুঁইফোড় ইউটিউব চ্যানেলগুলো বিখ্যাত ও প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমগুলোকে নকল করে যাচ্ছে৷
কিছু চ্যানেল বিবিসি নামটি সামান্য পরিবর্তন করে এই বিধিনিষেধগুলোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়। তারা নিজেদের লোগো তৈরি করেছে বিএসি ওয়ার্ল্ড নিউজ, ডিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ, বিডিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ, এবিসি বাংলা নিউজ, এবিসি ইন্টারন্যাশনাল নিউজ এবং এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ নামে। তার পরেও, বিবিসির লোগো এবং ব্র্যান্ডিংয়ের ধরনের সঙ্গে পুরোপুরি মিল রয়েছে এসব চ্যানেলের।
বিবিসির আদলে এমন অন্তত সাতটি নকল চ্যানেল এদের প্রোফাইল ছবিতে একটি ‘ধূসর রংয়ের টিক’ (গ্রে টিক) চিহ্ন যুক্ত করেছে যার মানে দাঁড়ায় এরা ইউটিউব প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে পরীক্ষিত বা ভ্যারিফাইড।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বিবিসির প্রেস অফিস ইমেলের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানায়। তাদের লিগ্যাল টিম (আইনি বিভাগ) এর আগে ওয়েবসাইট বা সামাজিক মাধ্যমে চালু এমন অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। বাদ যায়নি ইউটিউব চ্যানেল, যেগুলো বিবিসি বা বিবিসি নিউজ বাংলা’র ছদ্মবেশে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে ছদ্মবেশী চ্যানেলগুলোর অপতৎপরতা ফের শুরু হয়ে যায়।
সিএনএনসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের আদলে ভুয়া চ্যানেল
ইউটিউবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্যাবল নিউজ নেটওয়ার্ক (সিএনএন)-এর আদলে বেশ কয়েকটি চ্যানেল রয়েছে। যেগুলো সিএনএন-এর লোগো এবং ব্র্যান্ডিং ব্যবহার করছে। এর মধ্যে রয়েছে সিএনএন বাংলা 24 ও সিএনএন বাংলাদেশ, যারা নিয়মিত ভিডিও আপলোড করে।
২০২২ সালে সিএনএন কর্তৃপক্ষ ‘সিএনএন বাংলা টিভি নিউজ’ নামে একটি আইপিটিভির বিরুদ্ধে মামলা করে। হুবহু তাদের লোগো ব্যবহার করার অপরাধে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়। প্রাথমিক শুনানি শেষে এ ধরনের লোগো ব্যবহারের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও, সিএনএন বাংলা টিভির ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে ভুয়া চ্যানেলটির কার্যক্রম এখনও সচল রয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এবিসি এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক রয়টার্স-এর নামের সঙ্গে ‘বাংলা’ বা ‘ওয়ার্ল্ড নিউজ’ এর মতো শব্দ জুড়ে দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছে ছদ্মবেশী চ্যানেলগুলো। তবে তাদের সাবস্ক্রাইবার ‘ভুয়া বিবিসি’র তুলনায় অনেক কম।
সময় বিডি 24 নিউজ’ নামের একটি চ্যানেল বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম সময় টেলিভিশনের ছদ্মবেশ ধারণ করে। এর প্রোফাইল এবং কভার ছবিতে সময়ের আদলে লোগো রয়েছে। ভুয়া চ্যানেলটির ৯০ হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছে।
এই চ্যানেলটি প্রায়শই ভিডিও আপলোড করে, প্রচার করে ভুয়া শিরোনাম এবং থাম্বনেইলের মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায়। দুটি ইউটিউব চ্যানেল পাওয়া গেছে একাত্তর এবং যমুনা টেলিভিশনের আদলে। এ প্রসঙ্গে, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল 24-এর নির্বাহী পরিচালক তালাত মামুন বলেন, ইউটিউবে তাদের (চ্যানেল 24) লোগো সম্বলিত কনটেন্ট পাওয়ার বিষয়টি তার মনে ফিরে এসেছে। প্রথমে বিভ্রান্তিতে পড়ে গেলেও, পরে তিনি বুঝতে পেরেছেন কনটেন্টটি (সংবাদ) বানোয়াট ও ভুয়া।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক স্পর্শকাতর সময়ে সামাজিক মাধ্যমে খবর ছড়িয়েছে আমাদের লোগোসহ। এটা খুবই উদ্বেগজনক।’
নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও লঙ্ঘন ব্যাপক
ইউটিউব এর ‘ছদ্মবেশরোধী নীতিমালায়’ সংবাদমাধ্যম বা ব্যক্তির আদলে ছদ্মবেশী কনটেন্ট প্রচার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে। নীতি অনুসারে, যদি কোনও চ্যানেল বা এর বিষয়বস্তু বিজ্ঞাপনের পণ্য এবং পরিষেবার উত্স সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, তবে এটি বাতিল হতে পারে। এরমধ্যে এমন চ্যানেল রয়েছে যা প্রতারণা ও মুনাফার উদ্দেশ্যে অন্যের প্রোফাইল, পটভূমি বা সামগ্রিক আবহ নকল করে।
স্পষ্টভাবে এসব চ্যানেলগুলোকে উদ্দেশ করে ইউটিউবের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিদ্যমান সংবাদভিত্তিক চ্যানেলগুলোকে অনুকরণে কোন কনটেন্ট তৈরি করা যাবে না৷ এই নীতি লঙ্ঘন করলে অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বাতিল হতে পারে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, উল্লিখিত সব চ্যানেল স্পষ্টভাবে ছদ্মবেশী নীতি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে৷
এই সমীক্ষায় পাওয়া চ্যানেলগুলো, সরাসরি বিবিসির নাম বা লোগো ব্যবহার করার মাধ্যমে নিঃসন্দেহে একটি বৈধ সংবাদমাধ্যমের ছদ্মবেশ ধারণ করছে। এমনকি যারা শুধুমাত্র একটি অক্ষর পরিবর্তন করে তারাও বিবিসিকে অনুকরণ করার স্পষ্ট অভিপ্রায় প্রদর্শন করে।
একইভাবে যমুনা টেলিভিশন, সিএনএন এবং আল জাজিরার নকল করা ভুয়া চ্যানেলগুলোও নীতি লঙ্ঘন করেছে, তা সত্ত্বেও এদের শনাক্ত করতে বা তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে ইউটিউব।
বিবিসির ছদ্মবেশী ভুয়া ইউটিউব চ্যানেলগুলোর সব লিঙ্ক সিনিয়র সাংবাদিক ও বিবিসি বাংলার সাবেক সম্পাদক কামাল আহমেদের কাছে পাঠায় ডিসমিসল্যাব। এ বিষয়ে কামাল আহমেদ বলেন, ‘ নিজেদের ফায়দা লুটার জন্যে এগুলো বিবিসির ব্র্যান্ড ভ্যালুকে অনৈতিক ও লজ্জাজনকভাবে ব্যবহারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি বেশ উদ্বেগজনক যে বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব, এমনসব অসাধু ব্যক্তিদেরকে একটি স্বনামধন্য সংবাদমাধ্যমের পরিচয় লুট করে তা অপব্যবহারে অনুমতি দিচ্ছে। এটি করা হচ্ছে শুধুমাত্র ভুল তথ্য প্রচার করার জন্য নয় বরং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্যও।’
‘আমিও ভুগেছি (নকল চ্যানেলের কারণে)৷ আপনার (ব্যবসার) কোনো পণ্য নকল হলে আপনি যেমন ক্ষতির মুখে পড়েন। এটি একই রকম ক্ষতি,’ বলেন তালাত মামুন। ‘এটি নিয়ন্ত্রণে যে কর্তৃপক্ষের কাজ করার কথা তারা সেই অর্থে কার্যকর নয়। এমনকি এগুলো শনাক্ত করার পাশাপাশি নির্মূলে ইউটিউবের নিজস্ব মেকানিজমও (কর্মপন্থা) কাজ করছে না।
থাম্বনেইলে মিথ্যা ছড়ানোঃ
শুধু ছদ্মবেশই নয়, ভুয়া চ্যানেলগুলোও ইউটিউবের থাম্বনেইল নীতি লঙ্ঘন করছে। নীতিটি বলা আছে, থাম্বনেইলগুলো এমনভাবে ব্যবহার করা যাবে না যা দর্শকদের বিভ্রান্ত করে, যার ফলে তারা আস্থা হারায়, যে থাম্বনেইলে যে ছবি দেখানো হচ্ছে তা আসলে ভিডিওতে নেই।
গবেষণায় বিবিসিকে নকল করা ১৪টি সক্রিয় চ্যানেলের (প্রতিটির এক হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছে) ১২টি সাম্প্রতিক ভিডিও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই ১৬৮টি ভিডিওর প্রতিটিতে, থাম্বনেইলে উপস্থাপিত তথ্য বা ছবি সংশ্লিষ্ট ভিডিওর বিষয়বস্তুর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এই ভুয়া চ্যানেলগুলোর বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, বিশেষ করে ধর্মীয় অনুভূতি এবং যুদ্ধকেন্দ্রিক বিষয়বস্তু নিয়ে কনটেন্ট বানায়। তবে এদের থাম্বনেইলের বাক্য প্রায়শই মিথ্যা এবং কখনও কখনও অযৌক্তিক হয়ে থাকে।
উদাহরণস্বরূপ, ‘আন্তর্জাতিক খবর’, নামের চ্যানেলটি যার ১০ লাখের বেশি সাবস্ত্রাইবার রয়েছে, গত ৮ মার্চ পোস্ট করা তাদের একটি ভিডিওর থাম্বনেইলে দাবি করা হয়েছে, ‘ফিনল্যান্ড ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাচ্ছে’। তবে ভিডিওটি দেখে এমন তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি। একইভাবে, বিভ্রান্তিকর শিরোনাম সম্বলিত থাম্বনেইলগুলো যেমন ‘ভারতের সঙ্গে চীনের সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু’, ‘ধ্বংস হয়েছে ইসরায়েলের রাজধানী’ বা ‘রাতারাতি ৯০-টন পারমাণবিক হামলা’। কিছু থাম্বনেইলে যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা বিস্ফোরণের পাশাপাশি জো বাইডেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, নরেন্দ্র মোদি এবং ভ্লাদিমির পুতিনের মতো বিশ্বনেতাদের ছবি জুড়ে দেয়া হয়।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিটি চ্যানেলে গত পাঁচ মাসে আপলোড করা বেশিরভাগ ভিডিওর বিভ্রান্তিকর থাম্বনেইল রয়েছে। এই থাম্বনেলগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েল ধ্বংস হবে’, ‘ইহুদি সেনারা প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে’, ‘নেতানিয়াহু মারা গেছেন’, বা ‘ইসরায়েলি সৈন্যদের বন্দী ও হত্যা করা হয়েছে বা ‘৬ মিলিয়ন ইহুদি হত্যা করা হয়েছে’ এমনসব বিদ্বেষপূর্ণ কনটেন্ট ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে অনলাইন জনপ্রিয়তার একটি চিত্র ‘বিবিসি ওয়ার্ল্ড টিভি’ চ্যানেলে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত ১৬৫টি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে, প্রতিটির শিরোনাম ‘ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ’ সহ থাম্বনেইলে ইসরায়েলের পরাজয়ের বিভিন্ন মিথ্যা প্রতিবেদন রয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, চ্যানেলটি চালু হওয়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি গ্রাহক সংগ্রহ করতে পেরেছে।
Leave a Reply