বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হয়েছে। বারডেম জেনারেল হাসপাতালে দুই রোগীর শরীরে এই ছত্রাক সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এদের একজনের বয়স ৪৫ ও আরেকজনের ৬০ বছর।
কয়েকদিন আগে ভারতে বিরল ছত্রাকজনিত এই রোগটি ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশে এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে দুজন আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেল। করোনার চেয়েও এর মৃত্যুহার ২৫ গুণ বেশি। করোনা আক্রান্ত ডায়াবেটিস রোগী ও যাদেরকে স্টেরয়েড দেয়া হয়েছে, তারা রয়েছেন এর উচ্চ ঝুঁকিতে।
রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, গত ৮ মে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগীর শরীরে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর গত ২৩ মে ৬০ বছর বয়সী আরেক জনের শরীরেও ছাত্রাকজনিত রোগটি শনাক্ত হয়।
হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলছেন, যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল তাদের মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। নাক-মুখ দিয়ে প্রবেশ করে ব্ল্যাক ফাংগাস। আক্রান্ত ব্যক্তির চোখ-মুখ ফুলে ওঠে। নাকের ভেতর ও জিহ্বায় পড়ে কালো দাগ। অনেক ক্ষেত্রে জ্বরও দেখা দেয়। প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত হলে রোগ সারে। চোখ আক্রান্ত হলে অনেক ক্ষেত্রে অন্ধত্বের শিকার হয় রোগী। আর ছত্রাক মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়লে রোগীকে বাঁচানো যায় না। ভারতে এই রোগে আক্রান্তদের ৫০ ভাগই মারা গেছেন। অথচ করোনায় মৃত্যুহার দুই শতাংশের বেশি নয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সব বয়সী মানুষের এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি না থাকায় এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কিছু নেই। তবে, কোভিড-১৯ ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী, যারা স্টেরয়েড নিচ্ছেন, ক্যান্সার আক্রান্ত অথবা ক্যান্সারে কেমোথেরাপি চলে, এমন রোগীর প্রতিরোধ শক্তি কম। এছাড়া অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছেন, এমন রোগীরাই সবচেয়ে বেশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। তবে করোনার ভয়ঙ্কর রূপ দেখছে ভারত। এরইমধ্যে মধ্যে নতুন আতঙ্কের নাম ব্ল্যাক ফাংগাস। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় দশ হাজার। ৯টি রাজ্যে ব্ল্যাক ফাংগাসকে ঘোষণা করা হয়েছে মহামারি।
ভারতে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ২০০ জনের শরীরে মিউকরমাইকোসিস শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে ২১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, যেসব কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় অতিরিক্ত স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বাড়ছে।
Leave a Reply