নিজস্ব সংবাদদাতাঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার দরগাপাড়া এলাকায় আবু হোসাইন নামে স্কুলছাত্রকে হত্যা মামলায় মা-ছেলেসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম এই রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল পিপি।
এসএসসি পরীক্ষার্থী স্কুলছাত্র আবু হোসাইন (১৪ বছর তৎকালীন) হত্যা মামলার ১৪ বছর পর রায় ঘোষণার সময় আদলতে চারজন উপস্থিত ও এক আসামির অনুপস্থিতিতে এই আদেশ দেন বিচারক।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার পাঁচবিবি উপজেলার দরগাপাড়া গ্রামের আবু রায়হানের ছেলে রাফিউল (৩২), আবু রায়হানের স্ত্রী আমিনা বেগম (৪৯), কোকতারা গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে মোজাফফর হোসেন (৪৯) রুস্তম আলী ওরফে টুরার ছেলে গোলাম রব্বানী (৩৪) ও স্ত্রী সাহিদা বেগম (৪৮)।
সোমবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন- রব্বানী, রাফিউল, মোজাফফর হোসেন, সাহিদা বেগম। আর আমিনা বেগম নামে একজনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ২৫ মার্চ সকাল ৯টায় পাঁচবিবি উপজেলার দরগাপাড়া গ্রামে আবু তাহের তার পুকুর পাড়ে খড় তুলছিলেন, এ সময় রব্বানী, আরিফুল, রাফেউল, রোস্তম আলী, মোস্তফা, ছাইদার রহমান, আমিনা বেগম ও সাহিদা বেগম দলবদ্ধ হয়ে হাতে লাঠি ও লোহার শাবল দিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মারধর করে জখম করে। এ সময় আবু তাহেরের ছেলে আবু হোসাইন এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্য বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখেন তার বাবাকে মারধর করা হচ্ছে। আবু হোসাইন দৌড়ে বাবাকে রক্ষা করতে গেলে মাথায় আঘাত করে। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাঁচবিবি পরে জয়পুরহাট ও বগুড়া থেকে ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন আবু হোসাইনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা আবু তাহের বাদী হয়ে ২০১০ সালের ৩ এপ্রিল পাঁচবিবি থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১০ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে সোমবার আদালতের বিচারক এই রায় দেন।
মামলার সরকারি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন- নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল পিপি ও গোকুল চন্দ্র মণ্ডল এপিপি। আর আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান, হেনা হাবিব চপল।
Leave a Reply