কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): ঢাকার কেরানীগঞ্জে আলোচিত আব্বা বাহিনীর হাতে দখল হওয়ার ১০ মাস পরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে নিজবাড়ী ফিরে পেলেন গৃহবধূ মরিয়ম ও বাহাদুর দম্পতি ।
সোমবার( ৫ ফেব্রুয়ারি ) দুপুর ১২টায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত সরজিৎ কুমারের নেতৃত্বে ইকুরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদের একটি দল বাড়িটি দখলমুক্ত করে ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগমের কাছে বুঝিয়ে দেন।
আব্বা বাহিনীর সদস্যরা গ্ৰে প্তা র হ ও য়া র পর ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের চর মিরেরবাগ এলাকায় গত বছরের ১১ এপ্রিল নিজের বাড়ির সামনে মাদক বিক্রি ও সেবনে বাধা দেয়ায় আব্বা বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে শিশু সন্তানদের নিয়ে তিনদিন গৃহবন্দী করে রাখে তাদের। পরে তার স্বামী আবীর হোসেন বাহাদুর ৯৯৯ ফোনের মাধ্যমে বন্দীদশা থেকে মুক্ত হয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন গৃহবধূ মরিয়ম বেগম। এরপর পরপরই বাড়িটি দখল করে নেয় আব্বা বাহিনীর সদস্যরা। বাড়িটি দখলমুক্ত করে নিজ বাড়িতে বসবাসের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছেন গৃহবধূ মরিয়ম বেগম। কোথাও তিনি বিচার পাননি, থানা পুলিশ তার মামলা পর্যন্ত নেয়নি। আলোচিত গত ১১ই জানুয়ারি আব্বা বাহিনীর হাতে রাসেল হত্যাকান্ডের প্রধান আফতাব উদ্দিন রাব্বিসহ সদস্যরা ১৭ জানুয়ারি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মরিয়ম বেগমের বাড়ি দখলের ঘটনাটি আলোচনায় আসে। বিষয়টি জানতে পেরে প্রায় ১০ মাস পরে সেই বাড়িটি আবার দখল মুক্ত করে ভুক্তভোগীর কাছে ফিরিয়ে দিলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান।
বাড়িটি ফিরে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগম জানান, ১০ মাস পরে নিজ বাড়িতে ফেরার যে অনুভূতি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা। তবে আমার সাজানো সংসার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরের ভেতরে থাকা টিভি ফ্রিজ আলমারি শোকেস সব ভেঙ্গে লণ্ডভণ্ড করে ফেলেছে। আলমারিতে থাকা আমার স্বর্ণালংকার ও বাড়ির দলিলের কাগজপত্র সব লুট করে নিয়ে গেছে। ৯৯৯ এর সহযোগিতায় বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর প্রায় ১২ ঘন্টা আমাকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ইকুরিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। তখন আমার কোন অভিযোগ নেওয়া হয়নি। দশ মাস আমি আত্মীয়—স্বজনের কাছে ও ভাড়া বাসায় থেকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে কোন বিচার পাইনি। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় গেলেও সে সময় আমাকে থানায় ঢুকতে দেয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগমের স্বামী বাহাদুর জানান, ঘটনার দিন আমি ব্যবসায়কি কাজে ঢাকার বাহিরে ছিলাম। পরে আমি মোবাইল ফোনে জানতে পারি তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমি বাসায় আসতে চাইলে নিষেধ করে পুলিশের সহায়তা নিতে বলে। আমি জরুরী সেবা ৯৯৯ ফোন করে পুলিশের সহায়তা নিয়ে আমার স্ত্রী ও শিশুদের উদ্ধার করি। আজ ১০ মাস পর বাড়িতে এসে দেখি আমার নিজের একটি পালসার মোটর সাইকেল সেটিকে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে ও আগুন দিয়ে ধংস করা হয়েছে। নিজতলায় কয়েকটি রুমে ভাংচুর করে ঘরের দামী আসবাব পত্র ও বাড়ির বৈদ্যুতিক মিটার খুলে নিয়ে গেছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাহবুব আলম জানান, বাড়িটি দখলমুক্ত করে ভূক্তভোগী পরিবারের কাছে তাদের বাড়িটি উদ্ধার করে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে সে বাড়ি থেকে কোন কিছু খোয়া গেছে কিনা সে বিষয় তারা কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করব।
Leave a Reply