আগামী ২৬শে মে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলাদেশ উপকূলে। ইতোমধ্যেই বঙ্গোপসাগরের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে লঘুচাপ। আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে।
এদিকে, এই ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না বলে মনে করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। আর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় বলছে, সরকারের লক্ষ্য মৃত্যু শূন্যের কোঠায় রাখা। শনিবার বিকালে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির ‘পলিসি কমিটির সভা’র বৈঠক ডাকা হয়।
কমিটির বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান জানান, উপকূলীয় এলাকায় শতভাগ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে হবে। যে করেই হোক সবাইকে শেল্টারে আনতে হবে, একজনকেও রেখে আসা যাবে না। এবার আমরা টার্গেট রাখব, মৃত্যুহার যেন জিরো হয়।
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলাগুলোতে এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে প্রস্তুতি। প্রশাসনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকেরাও সতর্ক অবস্থায়।
গত বছরের মে মাসে বাংলাদেশে যে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হেনেছিল। সেই পুরোনো অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারের প্রস্তুতি তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তার আগে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময়ে পাঁচ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র ব্যবহার করা হয়েছিল। আম্পানের সময়ে ১৪ হাজার ৬৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২৪ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষকে রাখা হয়।
এছাড়া করোনার কথা মাথায় রেখে আশ্রয় কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবহার করা হবে। সবার জন্য মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
এই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসকে মোকাবিলায় এরই মধ্যে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ৩৪৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রশাসনের পাশাপাশি রেড ক্রিসেন্টের সেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
সাতক্ষীরায় ১৪৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি দুর্যোগে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে দেড় হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। খুলনায় ৩ শতাধিক আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার সঙ্গে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামতের।
লক্ষ্মীপুরে ৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্রের সঙ্গে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে ৬৫টি মেডিকেল টিম। নোয়াখালীতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বেসরকারি পর্যায়েও চলছে প্রস্তুতি।
ভোলায় সতর্কাবস্থায় রয়েছে প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৭০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। এগুলোতে আশ্রয় নিতে পারবে অন্তত ৫ লাখ।
Leave a Reply