ডেস্ক নিউজ: ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) মারা গেছেন। মৃত্যুর পর তার গলায় রশির দাগ পাওয়া যায়। তবে তাৎক্ষণিক ওইদিন মৃত্যুর কারণ জানতে না পারায় বিষয়টি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়।
এবার র্যাপিড অ্যাকশ ব্যাটালিয়ন (র্যাব) হুমায়রা হিুর মৃত্যুর রহস্য উদঘাপন করেছে। এ অভিনেত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানায়, ২০১৪ সালে হুমায়রা হিমুর খালাতো বোনের সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত জিয়াউদ্দিনের বিয়ে হয় এবং কিছুদিনের মধ্যে পারিবারিক সমস্যা জনিত কারণে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পারিবারিক আত্মীয়ের সম্পর্কের সুবাধে গ্রেপ্তারকৃতের সঙ্গে ভিকটিম হুমায়রা হিমুর পরিচয় হয়। তার খালাতো বোনের সঙ্গে জিয়াউদ্দিনের বিবাহবিচ্ছেদ হলেও হিমু ও জিয়াউদ্দিনের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে জানায় গ্রেপ্তারকৃত।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার সময় জিয়াউদ্দিন হুমায়রা হিমুর উত্তরার বাসায় আসে। তখন তাদের মধ্যে অনলাইন জুয়াসহ নানা ব্যাপারে বাকবিতণ্ডা হয়। অভিনেত্রী ভাঙচুর শুরু করে। একপর্যায়ে সে বাইরে থেকে একটি মই এনে সিলিং ফ্যান লাগানোর লোহার সঙ্গে পূর্ব থেকে বেঁধে রাখা প্লাস্টিকের রশিতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে জানায় জিয়াউদ্দিনকে।
এ অভিনেত্রী এর আগেও একাধিকবার আত্মহত্যা করবে জানিয়েছিল জিয়াউদ্দিনকে। এ কারণে ওইদিন গ্রেপ্তারকৃত হুমায়রা হিমুর হুমকিকে গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হুমায়রা হিমু সিলিংয়ে লাগানো রশি দিয়ে ফাঁস দেয়। পরে তাকে নামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় জিয়াউদ্দিন। এ সময় অভিনেত্রীর মেকআপ আর্টিস্ট মিহিরকে ডেকে আনা হলে বটি দিয়ে রশি কেটে নিচে নামিয়ে তার এবং বাসার দারোয়ানের সহায়তায় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক পরে মৃত ঘোষণা করেন হুমায়রা হিমুকে।
এর আগে হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় তার খালা বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০২, তারিখ ২ নভেম্বর ২০২৩)। এরই প্রেক্ষিতে গত মধ্যরাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনকে সূত্রাপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবদে হুমায়রা হিমুর আত্মহত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষীপুর জেলায় জন্ম হুমাইরা হিমু। তিনি ইস্পাহানি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথম নাট্য জগতে প্রবেশ করেন। ফ্রেঞ্চ নামক নাট্য দলের হয়ে তিনি অভিনয় করেন।
অসংখ্য টিভি নাটকে দেখা গেছে হিমুকে। ‘ছায়াবীথি’ নামের একটি নাটকের মাধ্যমে ২০০৬ সালে টেলিভিশন নাটকে তার অভিনয় শুরু। তার অভিনীত অসংখ্য জনপ্রিয় নাটকের মধ্যে রয়েছে, ‘ডিবি’, ‘সোনাঘাট’, ‘চেয়ারম্যান বাড়ি’, ‘শোনে না সে শোনে না’, ‘বাটিঘর’, ‘কমেডি-৪২০’, ‘চাপাবাজ’, ‘অ্যাকশান গোয়েন্দা’, ‘ছায়াবিবি’, ‘এক কাপ চা’ অন্যতম। ২০১১ সালে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ সিনেমাতে অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দাতেও অভিষেক হয় তার।
Leave a Reply