1. ashiqnur96@gmail.com : editor :
সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

ইজিবাইক চালক হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজন গ্রেফতার

  • সর্বশেষ আপডেট : শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩

কেরানীগঞ্জ(ঢাকা): গত পয়লা অক্টোবর মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার ইজিবাইক চালক মোস্তফা মাদবর হত্যাকান্ডের ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকান্ডের মূল অপরাধীসহ জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

ভিডিও দেখতে এই লিঙ্ক ক্লিক করুন 

গ্রেফতারকৃতরা হলো: মিরাজুল ওরফে মিরাজ (২৮), স্বপন ফরাজী (২৮) , পাপ্পু সরদার (২৪)।

শুক্রবার বেলা বারোটায় কেরানীগঞ্জের সদর দপ্তরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা জানায় র‍্যাব ১০ এর অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, অটোচালক হত্যায় জড়িত মিরাজুল নামে একজনকে গতকাল সন্ধ্যায় বরিশালের গৌরনদী থেকে গ্রেপ্তার করা হলে তার দেয়া তথ্য মতে বাকি দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত একজন পলাতক রয়েছে।

তিনি জানান,মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানাধীন দক্ষিণ মেদেনী মন্ডল এলাকায় বসবাসকারী মোঃ মোস্তফা মাদবর @মোস্তফা (১৮), পিতা-মোঃ আব্দুল হক মাদবর নামক একজন ইজিবাইক চালক সে ইজিবাইক চালিয়ে তার জীবিকা নির্বাহ করতো। গত ১ অক্টোবর বিকাল ৫ টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় সে ইজিবাইক নিয়ে যাত্রী পরিবহন করার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে মেদেনী মন্ডল (মিস্ত্রিপাড়া) এলাকার জনৈক সালেকের অটো গ্যারেজের উদ্দেশ্যে রওনা করে। তার রাত দশটার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা থাকলেও ঐদিন রাতে সে বাসায় না ফিরলে তার পরিবারের লোকজন তাকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে কোন সাড়া না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে এবং তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। অতঃপর গ্যারেজ মালিকের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে যে, মোস্তফা ঐদিন আনুমানিক সন্ধ্যায় ইজিবাইক চালানোর উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে পরদিন ২ অক্টোবর  সকাল ১০টার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে জানতে পারে যে, মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানাধীন হলদিয়া এলাকার একটি ডোবা জমির পাশে ভিটির ঢালে পানির মধ্যে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ পড়ে আছে। পরবর্তীতে মোস্তফার বাবা ও তার আত্মীয়স্বজন উল্লেখিত এলাকায় গিয়ে লাশটি মোস্তফার লাশ বলে শনাক্ত করে। অতঃপর ভিকটিম মোস্তফার বাবা স্থানীয় লোজনের সাহায্যে লৌহজং থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ লাশ ময়না তদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

সে ঘটনার পর নিহতের বাবা মোঃ আব্দুল হক মাদবর বাদী হয়ে  মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নম্বর-০১, তাং-০২/১০/২০২৩ ধারা- ৩০২/৩৯৪/২০১/৩৪ । সে হত্যা ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

ঘটনাটি জানতে পেরে র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের ছায়া তদন্ত শুরু করে ।  গতকাল ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার র‌্যাব-১০ এর  আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এবং র‌্যাব-৮ এর সহযোগীতায় বরিশাল জেলার গৌরনদী থানাধীন গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস ইজিবাইক চালক মোস্তফা হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মিরাজুল ইসলাম (২৮)কে গ্রেফতার করে। তার পিতা-মৃত জয়নাল হাওলাদার। গ্রামের বাড়ি দক্ষিণ শাতলা, থানা-উজিরপুর, জেলা-বরিশাল, বর্তমানে সে হলদিয়া তিন দোকান, থানা-লৌহজং, জেলা-মুন্সিগঞ্জ এলাকায় বসবাস করত।

ফরিদ উদ্দিন আরও জানান, গ্রেফতারকৃত মিরাজুল এর দেয়া তথ্যমতে অদ্য আজ ৬ অক্টোবর শুক্রবার আনুমানিক মাঝ রাত সোয়া ১টার দিকে র‌্যাব-১০ এর  আভিযানিক দল মুন্সিগঞ্জ জেলার পদ্মা উত্তর থানাধীন মাওয়া চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত অপর দুই আসামি  স্বপন ফরাজী (২৮), পিতা-মোঃ মোতালেব ফরাজি, তার গ্ৰাম ,দক্ষিণ মেদিনীমন্ডল,  পদ্মা উত্তর থানা, জেলা-মুন্সিগঞ্জ ও  পাপ্পু সরদার (২৪), পিতা-নুরুল ইসলাম মনু, তার গ্ৰাম-উত্তর পাকশিয়া, থানা-শ্রীনগর, জেলা-মুন্সিগঞ্জ। তাদের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত মিরাজ উক্ত হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। সে তার অন্যতম সহযোগী স্বপন ও পাপ্পুকে নিয়ে মোস্তফাকে হত্যা করে তার ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক গত ১ অক্টোবর  আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিরাজ, স্বপন ও পাপ্পু মুন্সিগঞ্জ জেলার পদ্মা উত্তর থানাধীন মাওয়া চৌরাস্তা এলাকা হতে ভিকটিম মোস্তফাকে মিরাজের ভাড়া বাসায় যাওয়ার কথা বলে মোস্তফার ইজিবাইকটি ভাড়া করে মিরাজের ভাড়া বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে। পরবর্তীতে আনুমানিক রাত পৌনে দশটার দিকে তাদের পূর্বপরিকল্পিত সুবিধাজনক স্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানাধীন হলদিয়া এলাকায় পৌছালে মিরাজ মোস্তফাকে ইজিবাইক থেকে নামতে বলে। অতঃপর মোস্তফা ইজিবাইক থেকে নামার সাথে সাথে স্বপন মোস্তফার গলায় রশি পেঁচিয়ে ধরলে মোস্তফা মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে। মোস্তফা মাটিতে লুটিয়ে পড়ার সাথে সাথে পাপ্পু মোস্তফার দুই পা চেপে ধরে এবং মিরাজ মোস্তফার মুখ মাটির সাথে চেপে ধরে যাতে করে মোস্তফা কোন ডাক-চিৎকার করতে না পারে। ভিকটিম মোস্তফার মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মিরাজ, স্বপন ও পাপ্পু মিলে মোস্তফার লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলের পাশে একটি ডোবায় ফেলে রেখে মোস্তফার ইজিবাইকটি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামিরা ইজিবাইক/অটো-রিকশা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সময় ভাড়ায় ইজিবাইক চালিয়ে অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি বিভিন্ন অপকর্ম করতো। ইজিবাইক ছাড়াও বিভিন্ন পানির মোটর, গাড়ির ব্যাটারি, গরু ইত্যাদি চুরি এবং মাদক সেবন ও জুয়া খেলাসহ বিভিন্ন অপকর্র্মের সাথে জড়িত ছিল।

এছাড়াও আসামি পাপ্পুর বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকার কদমতলী থানায় ১টি ছিনতাই মামলা এবং আসামি মিরাজের বিরুদ্ধে বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার ০১টি মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আপনি সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
    © ২০২৪ বুড়িগঙ্গা টিভি কর্তৃক সর্বসত্ব সংরক্ষিত।
 
Theme Customized By BreakingNews