অনলাইন ডেস্ক: ট্রাফিক পুলিশের গুলিতে নাহেল এল (১৭) নামের এক তরুণ নিহতের ঘটনায় অগ্নিগর্ভ গোটা ফ্রান্স। পরবর্তীতে দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে পুলিশ ৯০০ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। সহিংসতা এড়াতে দেশটির বেশ কিছু শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার কর্তৃপক্ষকে অধিক স্পর্শকাতর ভিডিও মুছে ফেলারও আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের এমন পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পে। তিনি দেশবাসীকে সহিংসতা থামিয়ে শান্তির ডাক দিয়েছেন। খবর গোলডটকম
গত মঙ্গলবার (২৭ জুন) ফ্রান্সের নঁতে শহরে গাড়ির ভেতর নাহেল এল নামের ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপরই শুরু হয় বিক্ষোভ। যা গত চার দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, দোকানপাটে ভাঙচুর করেছে বিক্ষোভকারীরা। কেউ কেউ আবার লুটপাটেও অংশ নিয়েছেন। চারদিন ধরে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করা হলেও এটি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
তবে ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু ঘটনা নতুন কিছু নয়। গত বছর ট্রাফিক চেকে পুলিশের গুলিতে রেকর্ড ১৩ জন মারা যায়। আর চলতি বছর এ ধরনের দ্বিতীয় ঘটনা ছিল নাহেলের মৃত্যু। বারবার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তির কারণেই মূলত এ বিক্ষোভ। তবে সেই বিক্ষোভ পরবর্তীতে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। উত্তরে লিলে ও রুবাইক্সে এবং দক্ষিণে মার্সেই পর্যন্ত দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে, রাস্তাগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে এবং কারে আগুন দেয়া হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ দেশবাসীর উদ্দেশে ফ্রান্স অধিনায়ক এমবাপ্পে টুইটে লিখেন, ফ্রান্সের সব মানুষের মতো আমরাও কিশোর নাহেলের মৃত্যুতে স্তব্ধ। প্রথমত, তার পরিবারের জন্য আমাদের সমবেদনা। অবশ্যই এ ধরনের অগ্রহণযোগ্য মৃত্যুতে আমরা সংবেদশীল না হয়ে পারি না। এ ঘটনার পর আমরা জনসাধারণের ক্ষোভের প্রকাশ দেখতে পাচ্ছি, যার ভিত্তিও আমরা বুঝতে পারছি। তবে ক্ষোভ প্রকাশের এই ধরণকে আমরা অনুমোদন দিতে পারি না। শ্রমজীবী শ্রেণির আশপাশ থেকে উঠে আসা আমাদের অনেকেই এই বেদনা ও কষ্টের সঙ্গে পরিচিত।
তবে সহিংসতা সমাধানের কোনো সঠিক পথ নয় উল্লেখ করে সবাইকে শান্ত ও সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে ফ্রান্স অধিনায়ক বলেন, সহিংসতা কোনো কিছুই সমাধান করতে পারে না। বিশেষ করে যখন এটা তাদের বিরুদ্ধেই যায়, যারা এটি প্রকাশ করে। তাদের পরিবার, কাছের মানুষ ও স্বজনরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনারা যা ধ্বংস করছেন, তা আপনাদেরই সম্পদ। তীব্র উদ্বেগপূর্ণ এ পরিস্থিতিতে আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমাদের নাগরিক বিবেক ডাক দিচ্ছে শান্তির, সচেতনতা ও দায়বদ্ধতার।
এর আগে নাহেলের মৃত্যুর পরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নিজের সমবেদনার কথা জানিয়েছিলেন এমবাপ্পে। এক টুইটে লিখেছিলেন, ফ্রান্সের জন্য আমার কষ্ট হচ্ছে। এই পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য। নাহেলের পরিবার ও কাছের মানুষের জন্য সমবেদনা। ছোট এই দেবদূত অনেক তাড়াতাড়ি অনেক দূরে চলে গেল।
Leave a Reply