দীর্ঘ সময় কারাগারে বন্দী থাকা জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন। ৩১ বছর ৭মাস কারাভোগ শেষে তিনি মুক্তি লাভ করলেন।
আজ বেলা পৌনে ১২টার দিকে তিনি জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বের হয়ে আসেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জন্মগ্রহণ করলেও জীবনের বেশিরভাগ সময় পরাধীন জীবনযাপন করেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ ঘাতক, ৬ জন যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি খুকু মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানসহ বাংলাদেশের আলোচিত প্রায় ২৬ জনের ফাঁসি দিয়েছেন। ১৯৭৯ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ৩৬টি মামলায় তার ১৪৩ বছরের সাজা হয়। পরে ৮৭ বছর জেল মাফ করে তাকে ৫৬ বছরের জন্য সাজা দেওয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর ও সশ্রম কারাদণ্ডের সুবিধার কারণে সেই সাজা ৪৩ বছরে এসে নামে। দুইটি মামলায় ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাস করে অতিরিক্ত এক বছর জেল খেটে ৪৪ বছর রোববার মুক্ত আকাশে শ্বাস ফেলার সুযোগ পাবেন জল্লাদ শাহজাহান।
১৯৮৯ সালে সহযোগী জল্লাদ হিসেবে গফরগাঁওয়ের নূরুল ইসলামকে ফাঁসি দিয়ে শাহজাহান তার জল্লাদ জীবনের সূচনা করে। এরপর কারাগারে মৃত্যুদণ্ড বাস্তবায়নের সময় আসলেই তার ডাক পড়ে। টানা আট বছর এই কাজ করার পর ১৯৯৭ সালে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রধান জল্লাদের স্বীকৃতি দেন।
জল্লাদ শাহজাহানের পরিচয়:
পুরো নাম মো. শাহজাহান ভূঁইয়া। জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ। জন্মস্থান নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামে। তিন বোন এক ভাই। বাবার নাম হাসান আলী ভূঁইয়া। মাতা সব মেহের। পড়াশোনা করেছেন এইচএসসি পর্যন্ত। তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম খাস হাওলা ফ্রি প্রাইমারি স্কুল, মাধ্যমিক পড়াশোনা করেছেন পারলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং সর্বশেষ উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা করেছেন নরসিংদী সরকারি কলেজে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত। ১৯৭৪ সালে তিনি এইচএসসি পাস করেন।
মুক্তি পেয়ে শাজাহান প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।
Leave a Reply