1. ashiqnur96@gmail.com : editor :
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ অপরাহ্ন

পরকীয়ার কারণে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় সালমাকে

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০২৩

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) : ঢাকার কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর এলাকায় সড়কের পাশে ঝোপের মধ্যে পড়ে থাকা সালমা নামের সেই নারীর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। পরকীয়ার পর বিয়ের জন্য চাপ দিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানায় পুলিশ। মঙ্গলবার ১৩ জুন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১১ জুন রাত ৮ টার দিকে জরুরী সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ সংবাদ পায় যে, কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাধীন পূর্বাশুরস্থ তমা কনস্ট্রাকশনের পরিত্যক্ত জমির জঙ্গলের ভিতরে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।

সংবাদটি পেয়ে কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহাবুদ্দিন কবীর ও, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মামুনুর রশীদ পুলিশের একটি টিম নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। পরে নারীর মৃতদেহের সুরতহাল করে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডফোর্ড) হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করেন।

ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

পরে ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামানের নির্দেশে , অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অপস্ অ্যান্ড ট্রাফিক-দক্ষিণ) এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহাবুদ্দিন কবীরের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই (নিঃ) অলক কুমার দে সহ কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার একটি চৌকষ তদন্ত টিম তদন্ত শুরু করে।

পুলিশ সিআইডির ক্রাইমসিনের সহযোগিতায় অজ্ঞাতনামা মৃতদেহের ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে তার নাম-পরিচয় সনাক্ত করে। পরবর্তীতে পুলিশ ডিসিষ্টের নাম-পরিচয় পাওয়ার পর তার পরিবারকে খবর দেয়। তারপর তদন্ত টিম ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামত ও পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করে। তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডে জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

পরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে গত ১২জুন মধ্যরাতে নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা থানার পশ্চিম মাসদাইর হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম (৩৮)-কে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী শহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সালমার সাথে শহিদুলের ৮ বছর ধরে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার ১দিন আগে সালমা শহিদুলের গ্রামের বাড়ী বরিশালে যায় এবং সালমা জানতে পারে যে শহিদুল বিবাহিত এবং তার স্ত্রী বরিশালে গ্রামের বাড়ীতে থাকে। এ তথ্য জানার পর ভিকটিম সালমা তাৎক্ষণিকভাবে শহিদুলকে ফোন করে ১ম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে সালমাকে বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। উল্লেখ্য যে, সামলা ডিভোর্সি এবং তার নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া একটি মেয়ে আছে। তারপর শহিদুল সালমাকে কৌশলে ঢাকায় আসতে বলে। ঢাকায় আসার পর শহিদুল সালমার সাথে ঘটনার দিন বিকেল ৫ টার সময় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা করে। ঐদিন শহিদুল রাত ১০ টার পর ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সালমাকে কেরাণীগঞ্জে নিয়ে আসে। তারপর শহিদুল ঘটনাস্থলের জঙ্গলে নিয়ে প্রথমে সালমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে সালমার সাথে থাকা উড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। অতঃপর সালমার মৃতদেহ যাতে সনাক্ত করা না যায় সেজন্য পাশে থাকা ইটের টুকরা দিয়ে মুখ থেতলিয়ে চেহারা বিকৃত করে শহিদুল পালিয়ে যায়।

হত্যাকান্ডের পর আসামী শহিদুল বার বার তার অবস্থান পরিবর্তন করে বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়ায় যাতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে না পারে। অবশেষে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার আভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা এলাকা হতে হত্যাকান্ডে জড়িত একমাত্র আসামী শহিদুলকে গ্রেফতার করে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আপনি সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
    © ২০২৪ বুড়িগঙ্গা টিভি কর্তৃক সর্বসত্ব সংরক্ষিত।
 
Theme Customized By BreakingNews