দিনভর মেঘের আনাগোনায় রাজধানী ঢাকায় ভ্যাপসা গরম অস্বস্তি বাড়াচ্ছিল। যদিও সঙ্গে দমকা বাতাসও ছিল। তবে ঢাকার তাপমাত্রা ক্রমেই বেড়ে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি চলে আসে।
মঙ্গলবার (১৬ মে) সন্ধ্যার পর ঢাকার আকাশে মেঘের আনাগোনা বেড়ে যায়। রাত পৌনে আটটার দিকে শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড়। বাতাসের তোড়ে ধুলোয় অন্ধকার হয়ে যায় চারপাশ। ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টিও। থেমে থেমে কানে বাজে বজ্রের গর্জন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে থামে ঝড়-বৃষ্টি। আর বৃষ্টিতে নগর জীবনে ফেরে স্বস্তি।
যদিও আগে থেকে দেশের আট বিভাগেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। মঙ্গলবার দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন সারাদেশে ঝড়-বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যে তাপপ্রবাহ বইছে তা-ও অব্যাহত থাকতে পারে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস তুলে ধরে আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রাজশাহী, নওগাঁ, মৌলভীবাজার, যশোর এবং কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী দু-দিনে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা আরও বাড়তে পারে।
মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল রাজশাহীতে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায়ও সব বিভাগে ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। এসময়ে সবচেয়ে বেশি ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর মাদারীপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর নৌ সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
Leave a Reply