জুমার পূর্বের চার রাকাত সুন্নত পড়া অবস্থায় অনেক সময় খতিব সাহেব খুতবা শুরু করে দেন। এক আলেম থেকে শুনেছি খুতবার সময় নামাজ পড়া নিষেধ। জানার বিষয় হলো, এমন পরিস্থিতিতে আমার জন্য করণীয় কী?
এমন প্রশ্নের উত্তরে আলেমরা বলেন, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় দুই রাকাতের পর সালাম ফিরিয়ে দেবেন। আর যদি তৃতীয় রাকাতে দাঁড়িয়ে যান তাহলে তৃতীয় রাকাতের সেজদা না করে থাকলে বসে যাবেন এবং সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন। উভয় অবস্থায় জুমার পর ওই চার রাকাত সুন্নত পড়ে নেওয়া উত্তম। আর যদি তৃতীয় রাকাতের সেজদা করে ফেলেন, তাহলে চার রাকাতই পূর্ণ করবেন। কারণ হাদিস দ্বারা সুদৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হয়, খুতবার সময় নিশ্চুপ হয়ে খুতবা শোনা ওয়াজিব ও কথাবার্তা বলা হারাম।
অনুরূপ খুতবার সময় সুন্নত-নফল নামাজ পড়াও বৈধ নয়। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন ইমাম খুতবার জন্য বের হবেন, তখন নামাজ পড়বে না, কথাও বলবে না’ (মেশকাত : ৩/৪৩২)। তাই মুসল্লিদের উচিত খুতবার সময় কথাবার্তা থেকে বিরত থেকে অত্যন্ত মনোযোগী হয়ে খুতবা শোনা এবং যেসব কাজ নামাজে নিষিদ্ধ তা থেকে বিরত থাকা। নামাজ শুরু করে থাকলেও দ্রুত শেষ করে খুতবা শ্রবণে মনোযোগী হওয়া।
ফিকাহ শাস্ত্রের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ ‘ফাতাওয়ায়ে শামি’তে একটি মূলনীতি উল্লেখ রয়েছে, ‘যেসব কর্ম নামাজের মধ্যে হারাম, তা খুতবা চলার সময়ও হারাম। যেমন, কথাবার্তা বলা, পানাহার করা ইত্যাদি’ (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৩/৩৫)। অনেক মুসল্লি খুতবা চলাকালে বিভিন্ন কাজে লিপ্ত হয়, যা সম্পূর্ণ শরিয়ত পরিপন্থি এবং হারাম। এ ছাড়া অনেক মসজিদে খুতবা চলাকালে চাঁদার বাক্স চালানো হয়, এটাও শরিয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েজ ও অশোভনীয়। তাই খুতবার সময় এসব নাজায়েজ কর্ম পরিহার করে মনোযোগী হয়ে খুতবা শোনা অত্যন্ত জরুরি। (আলমুহিতুল বুরহানি : ২/৪৬৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া : ২/৫৭৭)
Leave a Reply