নিজস্ব প্রতিবেদক: কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল বার বার খবরের শিরোনাম হচ্ছেন। তিনি বহুল আলোচিত, সমালোচিত ও বিতর্কিত তবে ইতিবাচক খবরের নয়, ঘুরেফিরে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে। বিতর্কিত কথা বলে সংবাদ শিরোনাম হচ্ছেন। বার বার এই শিল্পী উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছেন।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে এই শিল্পী কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে গান গাওয়ার সময় ‘অসংলগ্ন’ আচরণ করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা তার দিকে পানির বোতল ও জুতা ছুড়ে মারেন। এ ঘটনায় অনুষ্ঠানটি পণ্ড হয়ে যায়। নোবেল ‘নেশাগ্রস্ত’হয়ে মঞ্চে ওঠায় এমন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
গণমাধ্যমের খবর, মঞ্চে উঠে শিল্পী নোবেলের অসংলগ্ন আচরণ ও দর্শকদের জুতা ছোড়ার একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, মঞ্চে উঠে নোবেল প্রথমে তার চশমা খুলে পাঞ্জাবির কলারে রাখেন। তারপর তিনি দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘দ্বিতীয়বার কুড়িগ্রাম আসলাম। এর আগেও কুড়িগ্রাম এসেছিলাম তোমাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। এবার দেখা হলো আলহামদুলিল্লাহ।’ এরপর তিনি তার চশমা খুঁজতে থাকেন আর চিৎকার করে বলেন, ‘আমার চশমা কই।’ পরে পাঞ্জাবির কলার থেকে চশমা নিয়ে চোখে দেন এবং একটি গান পরিবেশন করেন।
গান শেষে দর্শকেরা যখন উল্লাস করছিলেন, তখন নোবেল তাদের চুপ থাকতে বলে মাইক্রোফোনের স্ট্যান্ড আছড়াতে থাকেন এবং তা ভেঙে ফেলেন। এ সময় দর্শকেরা ক্ষেপে গিয়ে পানির বোতল ও জুতা ছুড়তে থাকেন। পরে মঞ্চে থাকা আয়োজকদের কয়েকজন এসে নোবেলকে সরিয়ে নিয়ে যান।
গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে বান্দরবান ঘুরতে গিয়ে বাসস্ট্যান্ড ও আবাসিক হোটেলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটান নোবেল। বান্দরবানের গার্ডেন সিটি নামের একটি হোটেলে উঠে রাত ১১টা থেকে গভীররাত পর্যন্ত হোটেলে মাতলামি করেন। হোটেল স্টাফদের মারধরও করেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে সামলাতে ব্যর্থ হয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে পুলিশ এনে তাকে নিবৃত করে। তার আচরণে বিরক্ত হয়ে একটি বাস তাকে ও তার সঙ্গীদের তুলতে রাজি হয়নি।
এই সফরে গিয়ে নোবেল তার নারী সঙ্গীসহ এমন একটি ছবি তার ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন, যাতে মনে হয়, তিনি গাঁজা সেবন করছেন। একই বছরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মানহানিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে বিতর্কিত গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আদালতে মামলার আবেদন করেন গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক ইথুন বাবু।
এখানেই শেষ নয়, ২০২১ সালে বাংলাগানের যুবরাজ আসিফ আকবরের প্রিয় একটি গিটার ভেঙে পালিয়ে যান নোবেল। ছোটবেলা থেকেই আসিফ আকবরের ভক্ত নোবেল। আসিফের একাধিক জনপ্রিয় গানও কভার করেন তিনি। এক সময় দেশের জনপ্রিয় এই গায়কের সান্নিধ্য পান নোবেল। তারই সুবাদে আসিফের অত্যন্ত যত্নে রাখা প্রিয় একটি গিটার বাজানোর সুযোগ পান বিতর্কিত এই গায়ক। কিন্তু আসিফের সেই গিটার ভেঙে ফেলেন তিনি। এ জন্য কোনো অনুশোচনাও করেননি। যে গিটার বাজিয়েছেন লাকী আখ্ন্দ, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, মানাম আহমেদ, শওকত আলী ইমন, এস আই টুটুলসহ অনেক গুণী শিল্পী, সুরকার সঙ্গীত পরিচালক।
এরকম অসংখ্য বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে হাত পাকিয়ে বিতর্কিত একজন শিল্পীর তকমা নিজের নামের সঙ্গে যুক্ত করেন নোবেল। কিন্তু কেন নোবেল বার বার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করছেন? কেন বিতর্কিত মন্তব্য করে মানুষকে অসম্মান করছেন? কেন নেশাগ্রস্ত হয়ে মঞ্চে উঠছেন? তার কি মানসিক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে? তার কি মানসিক চিকিৎসা জরুরি? নোবেলকে ঘিরে এ রকম অসংখ্য প্রশ্ন রয়েছে সমাজের অনেকেই।
Leave a Reply