নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলা বর্ষবরণ নিয়ে কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এতে তিনি তার ছোটবেলার বর্ষবরণ নিয়ে নানান কথা তুলে ধরেছেন।
আসিফ আকবরের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তার ফেসবুক থেকে হুবহু তুলে ধরা হলো:-
“তখন ফেসবুক ছিলো না, পান্তা ইলিশের ফটকা ঐতিহ্যও ছিলোনা। পহেলা বৈশাখের আনন্দ ছিলো, উৎসব ছিলো। সকাল সকাল কুমিল্লা টাউন হল মাঠে গিয়ে হরেক রকম খেলনা কেনা এবং খেলা, নাগরদোলায় চড়ে মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের অনুভূতি নেয়া ছিল মহা উত্তেজনার বিষয়। আব্বাকে দেখতাম টাউন হলে মাছের বাজারে ঢুকে হাঁটাহাঁটি করতে, পরে দামে সুবিধা করতে না পেরে রাজগঞ্জ বাজার থেকে সিলভার কার্প কিনে বড় বড় মাছের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতেন, বড় রুই কাতল মাছ শুধু দেখেই যেতাম। তিলের খাজা মুরালি কটকটি জিলাপীসহ টকটকে লাল তরমুজের টুকরার আকর্ষন ছিল অমোঘ। রাতের বেলায় দীপক দা অথবা লিপটন শাউ’র বাসায় মুড়িঘন্টসহ নানান পদের সবজী আর বড় কাতল মাছের দোপেঁয়াজা ছিল অমৃত।
পাড়া মহল্লা জুড়ে ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ। ছিলনা কোন জাত পাত ধর্ম বর্ণের ভেদাভেদ। কুমিল্লা পৌরউদ্যানের জামতলায় বর্ষবরণ উৎসবে গান কবিতা অভিনয় নিয়ে আমাদের শৈশবের শত আবেগ। সমস্বরে গাইতাম – এসো হে বৈশাখ এসো এসো। তপ্ত দুপুরে পুকুরে মাছধরা আর ডুবাডুবি খেলার আনন্দ ভুলতে পারিনা। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার এক অদ্ভূত প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত থাকতো সবাই। নতুন বছরের পরিকল্পনা আর ছেলেমানুষীর হাজারো আনন্দ এখনো শুদ্ধ অতীতে নিয়ে যায়।
ফেসবুক আসার পরে পহেলা বৈশাখ নিয়ে শুরু হওয়া বিষাক্ত বিভক্ত খেলা আমার রঙ্গীন শৈশবকে হত্যা করতে পারেনি। এখন খুব একটা উদযাপন করতে পারিনা কিংবা করা হয়ে উঠেনা। অতীতের মধুময় স্মৃতিগুলো রোমন্থন করেই বাঁচতে বেশ ভাল লাগে। পহেলা বৈশাখ আমাদের বাংলা বর্ষবরণ মহা উৎসবের দিন। সারা বিশ্বের সব জাতিই তাদের নিজস্ব বর্ষবরণে আনন্দ করে থাকে। আমরাও করেছি এবং করে যাবো। যদিও পহেলা বৈশাখ চলে গেলেই আবার ইংরেজী বছরের হিসেবে ঢুকে যাই, তবুও সব্বাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।”
Leave a Reply