ঢাকার বংশালে এক রিকশাচালককে মারধর করার পর পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন সুলতান আহমেদ নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই চালককে মারধর করা সময় ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন ডিবিসি টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক লিটন মাহমুদ। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম ফেসবুকে ছড়ানোর কিছুক্ষনের মধ্যেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সুলতানকে আটক করে পুলিশ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, রিকশাচালককে মারধর করা সুলতান আহমেদ পেশায় বাইসাইকেল ব্যবসায়ী।
ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিক লিটন মাহমুদ বলেন, ‘মঙ্গলবার (৪ মে) বেলা দেড়টার দিকে বংশাল থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত দুস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠান কাভার করতে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে বংশাল মোড়ে (রোকনউদ্দিন জামে মসজিদের একটু সামনে) যানজটের মধ্যে হঠাৎ ওই ব্যক্তি (সুলতান আহমেদ) বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে রিকশাচালকে মারধর শুরু করেন। রিকশায় থাকা যাত্রী তাকে থামানোর চেষ্টা করলে সুলতান তার দিকেও তেড়ে যান।’
সাংবাদিক লিটন মাহমুদ আরো বলেন, ‘প্রায় ৫-৭ মিনিট ধরে এভাবে রিকশাচালকে মারধর করতে থাকেন সুলতান। এ ঘটনা দেখে আমি মোটরসাইকেল থামিয়ে পকেট থেকে ফোন বের করে ভিডিও ধারণ করি। মারধরের একপর্যায়ে রিকশাচালক আল্লাহর কাছে বিচার চাইলে ওই ব্যক্তি (সুলতান) আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উপর্যুপরি মারধর করতে থাকেন। মারধরের একপর্যায়ে রিকশাচালক অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। এরপর আশপাশের মানুষ ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করার আগে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে আশপাশের দোকানদারকে জিজ্ঞাসা করলে কেউ তার (সুলতান) সম্পর্কে কোনো কিছু বলতে চাইছিল না। পরে ভিডিওটি আমার ফেসবুক ওয়ালে দিলে মুহূর্তের মধ্যে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।’
এরপর সুলতান আটক হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে লিটন মাহমুদ বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে তৃপ্ত। যদি এ ঘটনার ন্যায়বিচার হয় তবে মনে করবো, দেশে এখনও গরিব মানুষ বিচার পায়। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।’
পুলিশ সদরদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক-এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, একজন সংবাদকর্মী মঙ্গলবার বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি ভিডিও লিংক পাঠান। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বংশালে এক ব্যক্তি এক রিকশাওয়ালাকে থাপ্পড় মারছেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে রিকশাওয়ালা মাটিতে পড়ে যান এবং জ্ঞান হারালে পাশ থেকে লোকজন এগিয়ে আসে।
এআইজি বলেন, ভিডিওটি দেখামাত্র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকিরকে নির্দেশনা দেয় নিপীড়নকারী লোকটিকে খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে। এরই প্রেক্ষিতে ওসির নেতৃত্বে একটি টিম অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে আইনের আওতায় আনা হয়। ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি বংশাল এলাকার বাড়িওয়ালা এবং প্রভাবশালী। তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলেও জানায় পুলিশ সদরদফতর।
[…] […]