আজ অগ্নিঝরা মার্চ। বছর ঘুরে আবার সমাগত বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের দিন। একটি নতুন পতাকা, একটি বজ্র কণ্ঠ ভাষণ, একটি ভীষণ কালো রাত; সবমিলিয়ে ১৯৭১’র মার্চকে ধরা হয় বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের চূড়ান্ত মৌসুম।
আজকের এই দিনেই তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন জাতীয় পরিষদের অধিবেশন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয়দফা কিংবা ৬৯’র গণ অভ্যুত্থান। মুক্তি সংগ্রামে প্রতিটি সিঁড়ি অতিক্রম করে যখন ৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশভাবে জয় লাভ করে বাঙালি। তখন নতুন করে অগ্নিঝড়া মার্চের সম্মুখীন বাংলার এই মুক্তিকামী জনগণ। কারণ পাকিস্তানী সামরিক জান্তার ক্ষমতা হস্তান্তরের টালবাহানা আর নীল নকশার সূত্রপাত হয় এ মাসেই।
১৯৭১’র ১ মার্চে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য তৎকালীন পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। রেডিওতে খবরটি প্রকাশের পরপরই পাকিস্তানবিরোধী মিছিলে অগ্রগামী হয় চট্টগ্রাম।
এরপর ২ মার্চের হরতাল, ৩ মার্চ চট্টগ্রামের বাঙালির উপর বিহারিদের চালানো গণহত্যা, গায়েবানা জানাজাসহ সংগ্রাম গাথা দিনগুলো পেরিয়ে আসে মুক্তিকামী বাঙালীর সেই দিন, যেদিন স্বাধীনতা সংগ্রামের রূপরেখা তুলে ধরেছিলেন জাতির জনক। মূলত এ ভাষণের পরেই মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে শুরু করে পূর্ব বাংলার মানুষ।
২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিরা বাঙ্গালীর কন্ঠ চিরতরে স্তব্দ করে দেয়ার লক্ষ্যে অপারশেন সার্চলাইট নামে বাঙ্গালি নিধনে নামে। ঢাকার রাস্তায় বেরিয়ে সৈন্যরা নির্বিচারে হাজার হাজার লোককে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষককে হত্যা করে।
এর পরের ঘটনাপ্রবাহ প্রতিরোধের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর আহবানে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলা হয়। আবালবৃদ্ধবনিতা যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বের বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে জাতি লাভ করে স্বাধীনতা।
Leave a Reply