ঢাকার কেরানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর রুবেল হত্যাকান্ডে জড়িত আসামি বাপ্পিকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি বাপ্পি পেশাদার ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য। বাপ্পি ফুটপাতের দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করত। চাঁদা না দেওয়ায় রুবেলকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিবিআইয়ের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মীর মো. শাফিন মাহমুদ।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মো. শাফিন মাহমুদ জানান, ভিকটিম রুবেল খান স্বপরিবারে কেরানীগঞ্জের পূর্ব বন্ধ ডাকপাড়া এলাকায় বসবাস করত এবং ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। এ সময় জৈনক মোবারক ও ভিকটিমের ছোট ভাই শাহিন যৌথভাবে ভিকটিম রুবেলদের বাসার সামনে বাচ্চাদের খেলনার দোকান দেয়। গত বছর ১ মে সন্ধ্যায় আসামি বাপ্পী, মাসুদ ও ইমন হাওলাদারসহ আরও কয়েকজন মোবারক ও ভিকটিমের ছোট ভাই শাহিনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় বিভিন্ন হুমকি প্রদান করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ঝগড়া বিবাদের সৃষ্টি হয়। তখন ভিকটিম মো. রুবেল সেখানে উপস্থিত হয়ে সেখান থেকে আসামি বাপ্পী, মাসুদ ও ইমন হাওলাদারদের সরিয়ে দেয়।
ঘটনার দিন গত ২ মে রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টায় ভিকটিম রুবেল বাসা থেকে দোকানের উদ্দেশ্যে বের হয়। দোকানে যাওয়ার পথে আবুল সর্দারের গলিতে আসামি বাপ্পী, ইমন, রাজিব, রকি, পাপ্পু, মাসুদসহ আজ্ঞতনামা আসামিরা পূর্ব বিরোধের জের ধরে মোবারককে মারপিট করছে দেখে ভিকটিম রুবেল মোবারককে বাঁচাতে এগিয়ে যায়। তখন আসামিরা ভিকটিম রুবেল এবং মোবারককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আহত করে। তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
আহত অবস্থায় ভিকটিম রুবেল ও মোবারককে চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম রুবেলকে মৃত ঘোষণা করে। মোবারক স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে। ওই ঘটনায় রুবেল মা বাদি হয়ে ইমন হাওলাদার, মো. রাজিব, মো. রকি, মো. জীবন, মো. বাপ্পী, মো. পাপ্পু, মাসুদসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার মামলা দায়ের করেন।
মীর মো. শাফিন মাহমুদ আরও জানান, মামলার ঘটনায় জড়িত ঠিকানাবিহীন গুরুত্বপূর্ণ আসামী মো. বাপ্পি। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বিধি মোতাবেক বাপ্পি বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, মামলার ঘটনায় গ্রেফতারকৃত এজাহার নামীয় আসামি ইমন হাওলাদার, রাজিব, রকি, জীবন মাতুব্বর, মাসুদদের থানা পুলিশ কতৃক গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের মধ্যে আসামি ইমন হাওলাদার, রাজিব, রকি, জীবন মাতুব্বরগণ বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারামতে দোষ-স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ঘটনার সঙ্গে মো. বাপ্পিও জড়িত রয়েছে বলে সকল আসামিরা বিজ্ঞ আদালতে প্রদত্ত জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে।
Leave a Reply