স্টাফ রিপোর্টারঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক গৃহবধুর পায়ে চর্মরোগের কারনে সংসার ভাঙ্গনের মুখে পরেছে। কারনে-অকারনে বিভিন্ন সময় স্বামী ও শ্বশুর পরিবারের লোকজন ওই গৃহবধুকে শারীরিক নির্যাতন করে আসছে।
এঘটনা নিয়ে একাধিকবার শালিস-বৈঠক হলেও কোন কাজ হয়নি। গৃহবধু ও তার পিতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের অশোকসেন গ্রামের মধুসুদন হালদারের ছেলে সুব্রত হালদারের সাথে দেড় বছর পূর্বে রত্মপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের শ্যামল মন্ডলের মেয়ে সুর্বনা মন্ডলের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। সুর্বনার পিতা হতদরিদ্র হওয়ায় বিয়ের সময় জামাই সুব্রত হালদারের পরিবারকে কিছুই দিতে পারেনি। বিয়ের সময় সুব্রত হালদারের বোন জো¯œা হালদার ওই গৃহবধুর পায়ে চর্মরোগ দেখে-শুনে ভাইয়ের জন্য সুর্বনাকে পছন্দ করে ঘরে তুলে আনেন। স্বামীর পরিবার থেকে সুর্বনার পায়ের চর্মরোগের চিকিৎসা করানো হলেও তাতে ভাল না হওয়ায় সুর্বনার উপর কারনে-অকারনে বিভিন্ন সময় স্বামী ও শ্বশুর পরিবারের লোকজনের নির্যাতনের মাত্র বেড়েই চলে। সুর্বণার শ্বশুরী উষা রানী হালদার পুত্রবধুর পায়ে চর্মরোগ দেখে অনন্তোষ প্রকাশ করে গৃহবধুর পিতার পরিবারের কাছে যৌতুক দাবি করেন। এরপর থেকে ওই গৃহবধুকে পিতার বাড়ি বারপাইকা যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এবং পিতার বাড়ি থেকে ভাই-বোন বিভিন্ন সময় খাবার নিয়ে আসলেও ওই গৃহবধুকে না খেতে দিয়ে ফেলা দেওয়া হত। এমনকি পিতা বাড়ি থেকে আসা লোকজনের সাথে কথাও বলতে দেওয়া হয়না। এঘটনা নিয়ে ইউপি সদস্য মানিক সরদার, মশিউর সরদার ও মহিলা ইউপি সদস্য মমতা বিশ্বাস, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা অরুন মধুসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা একাধিবার শালিস-বৈঠক করে সমাধান করে দিলেও কয়েকদিন পরই পুনরায় সুর্বনার উপর নির্যাতন শুরু হয়। এরই মধ্যেই সুর্বনার গর্ভে একটি কন্যা সন্তানের জম্ম হয়। কন্যা সন্তান জম্ম নেওয়ার কারনে গৃহবধু সুর্বনার উপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। এভাবে দিনের পর দিন শ্বশুরী উষা রানীর গালমন্দ আর স্বামী সুব্রত হালদারের নির্যাতন সয্য করেই সংসার করে যাচ্ছেন সুর্বনা। এব্যাপারে গৃহবধুর সুর্বনা হালদার সাংবাদিকদের বলেন, স্বামী ও শ্বশুরীর চাহিদামত যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় সংসার ভাঙ্গনের মুখে। তার পরে সয্য করে স্বামীর সংসার করে যাচ্ছি। স্বামী সুব্রত হালদার যৌতুক ও কন্যা সন্তান হওয়ায় নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন, স্ত্রী সুর্বনা অতিরিক্ত কথা বলায় মাঝে মধ্যে মারধর করা হয়। বিয়ের সময় সুর্বনার চর্মরোগের কথা গোপন রেখে আমার সাথে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সুর্বনার শ্বশুরী উষা রানী হালদার বলেন, চর্মরোগ বা যৌতুকের ব্যপারে পুত্রবধুকে কখনও গালমন্দ করা হয়নি। বিয়ের সময় বেয়াই বাড়ি থেকে কিছুই আমার ছেলেকে দেওয়া হয়নি। সুর্বনার পিতা শ্যামল মন্ডল বলেন, সরকারের দেওয়া ঘরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছি। কাঠ মিস্ত্রি কাজ করে সাংসার চালিয়ে আসছি। মেয়েকে কিছু দেওয়ার সামর্থ আমার নেই। তারা সব জেনে বুঝে দেখেই মেয়ে সুর্বনাকে বউ করে নিয়েছে।
বুড়িগঙ্গা টিভি/ নাজমুল
Leave a Reply