কেরানীগঞ্জ (ঢাকা):
ঢাকার কেরানীগঞ্জে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার বাদীপক্ষকে মামলা তুলে নিতে হুমকি ও প্রাণনাশের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে জামিনে মুক্ত আসামির লোকজনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নিহতের মামা রেজাউল মৃধা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
অভিযোগকারী রেজাউল মৃধা বলেন, ভাগনি মোরশেদা আক্তার ঊর্মির বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। একপর্যায়ে পরিবার থেকে প্রায় ৮ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। এ নিয়ে গত বছরের ১০ জুলাই থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছিল। সর্বশেষ গত ২৬ জানুয়ারি তারা নতুন বাড়ি নির্মাণের জন্য আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুক না পেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি ভাগনির জামাই সজিব হুমকি দিয়ে বলেছিল, যৌতুক না দিলে ভাগনিকে মেরে সে জেল খাটবে। সেদিনই তাঁরা ভাগনিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যার গল্প সাজিয়ে প্রচারের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় আমার ভগ্নিপতি ভাগনের স্বামী সজিব খান (২৫), দেবর রাজিব খান (২১), ভাসুর আরিফ খান (৩০) ও শাশুড়ি পিয়ারা বেগম (৫০) কে এজাহারভুক্ত আসামি করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে। এরপর থেকে তারা পলাতক থাকে। একপর্যায়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত ৩ ফেব্রুয়ারি আমরা সংবাদ সম্মেলনও করি। পরবর্তীতে মামলার প্রধান আসামি সজিবকে র্যাব বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন আগে সজিব জামিনে বের হওয়ার পর থেকে তাঁর লোকজন মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। মঙ্গলবার সকালে খেজুরবাগ কবরস্থান এলাকায় কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি এসে মামলাটি তুলে নিতে আমাকে চাপ ও হুমকি দেন। তাঁরা জানান, মামলা না তুললে ‘আমাদের পরিবারের সদস্যদের প্রাণে মেরে ফেলা হবে।’ তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তারা আমার ভাগনিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এখন আমাদেরও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে থানায় জিডি করেছি। আমরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোরশেদা আক্তার ঊর্মির স্বামী ও মামলার প্রধান আসামি সজিব খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগটি পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “আমাকে ফাঁসানোর জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, “আজ মঙ্গলবার মোরশেদা আক্তারের মামা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
Leave a Reply