নিজস্ব সংবাদদাতা: কৃষিজমি ও জলাশয় দখল করে আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করায় মিলেনিয়াম সিটি, শতরুপা হাউজিং ও মধু সিটির বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এই তিন আবাসন প্রতিষ্ঠানের হাত থেকে জলাশয়, কৃষিজমি উদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে রাজউক।
আজ বৃহস্পতিবার রাজউকের নগর পরিকল্পনা শাখারউদ্যোগে এই অভিযান পরিচালিত হয়। টোটাইল ও ঘাটারচর মৌজার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা-ড্যাপে (২০২২-২০৩৫) চিহ্নিত মুখ্য জলস্রোত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত জলাশয়, কৃষিজমি, বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল (জলকেন্দ্রিক পার্ক) যা টোটাইল বিল নামে পরিচিত। আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ইচ্ছেমতো ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রি করেছিল। কোথাও কোথাও বহুতল নির্মাণও করেছিল।
উক্ত এলাকায় কৃষিজমি ও জলাধার রক্ষার স্বার্থে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট পিটিশন করে। পরে হাইকোর্ট এ সকল হাউজিংয়ের সকল কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।
হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে অঞ্চল-৫-এর পরিচালক মো. হামিদুল ইসলাম, উপ-নগর পরিকল্পনাবিদ নবায়ন খীসা, মুস্তাফিজুর রহমান, রওনক জাহান, অথরাইজড অফিসার মো. মেহেদী হাসান খান ও সহকারী নগর পরিকল্পনাবিদগণের উপস্থিতিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উচ্ছেদ অভিযানে বিপুল সংখ্যক আইন শৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতির পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তর, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণের সহয়তায় করেন।
উচ্ছেদ অভিযানে ৬ টি ভবন, একটি লোহার ব্রিজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এছাড়া আনুমানিক ৬০-৭০টি তারবিহীন খালি বিদ্যুৎ খুটি অপসারণ করা হয়েছে এবং ৬টি মিটার জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া একটি ড্রেজার মেশিন ও একটি বুস্টার মেশিন ভেঙে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অভ্যন্তরে ভরাটকৃত বালু উত্তোলন করা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্লটের সীমানা প্রাচীর ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
ভবিষ্যতে ঢাকা শহরের অন্যান্য অবৈধ আবাসন প্রকল্প/ বালু ভরাটকারী চক্র যারা পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তাদের উদ্দেশ্যে সতর্কতামূলক বার্তা হিসেবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এরূপ অভিযান একটি অন্যতম উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মনে করেন উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তারা।
Leave a Reply