1. ashiqnur96@gmail.com : editor :
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৬ অপরাহ্ন

মোদির স্ট্যাটাসে বিতর্কের ঝড়

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল ভারত। এমনটি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, সেই ঐতিহাসিক জয়ে সাহসী ভারতীয় সৈনিকদের আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। হাজার বছরের গর্বিত বাঙালি জাতির বীরত্বের অবিস্মরণীয় দিন আজ। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন ও স্বার্বভৌম দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই যুদ্ধের শেষ দিকে ৩ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ শুরু করেছিল তখনকার ঘনিষ্ঠ মিত্র প্রতিবেশী ভারত। ১৩ দিনের সেই যুদ্ধ ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের আত্মসমার্পণ এবং মহান বিজয় দিয়ে শেষ হয়। খবর দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

এদিকে বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেন, ১৯৭১ সালে এই বিজয় দিবসে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল ভারত। ভারতের সেই ঐতিহাসিক জয়ে সাহসী সৈনিকদের আত্মত্যাগকে সম্মানও জানিয়েছেন তিনি। এক্সে দেয়া পোস্টে নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, আজ বিজয় দিবসে, আমরা ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রাখা সাহসী সৈনিকদের সাহস এবং আত্মত্যাগকে সম্মান জানাই।’ তার দাবি, ‘তাদের নিঃস্বার্থ নিবেদন এবং অটল সংকল্প আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের গৌরব এনে দিয়েছে।’

মোদি আরও বলেন, ‘এই দিনে তাদের অসাধারণ বীরত্ব এবং তাদের অদম্য চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাদের আত্মত্যাগ চিরকাল প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আমাদের জাতির গৌরবের ইতিহাসে গভীরভাবে গেঁথে থাকবে।’

মোদির এমন স্ট্যাটাসের পরই তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু মোদি দাবি করেছে, এটি শুধু ভারতের যুদ্ধ এবং তাদের অর্জন। তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের অস্তিত্বই উপেক্ষিত।
যখন এই স্বাধীনতাকে ভারত নিজেদের অর্জন হিসেবে দাবি করে, তখন আমি একে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, এবং অখণ্ডতার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখি। ভারতের এই হুমকির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়া অবশ্যম্ভাবী। এই লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতেই হবে।

আমিনুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, একেই ভারতীয় আধিপত্যবাদ বলে। তাই ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদকে ‘না’ বলতে হবে। ফুল স্টপ।

একাত্তরের বিজয় আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিজয়। একজন চা বিক্রেতার এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ স্ট্যাটাসের প্রতিবাদ আমাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে করা উচিত।

মোহাম্মদ সাব্বির জানিয়েছেন, আমরা ভারতপন্থী না বা পাকিস্তানপন্থীও না। আমরা বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী যুবকের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা জরুরি। যেকোনো সময় যেন তারা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে।

প্রসঙ্গত, একাত্তরে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের মধ্য দিয়ে জাতি আজ নতুন করে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করছে। ইতিহাসে প্রথম দ্বিতীয় ‘বিজয় দিবস’ পেয়েছে বাংলাদেশ। দেড় দশকের বেশি সময় ধরে চলা স্বৈরাচারী শাসন, ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর জন্য ক্ষুব্ধ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এ বছর স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর, বাংলাদেশের নবযাত্রায় জাতি নতুন উদ্যম ও উদ্দীপনা নিয়ে দিনটি পালন করছে। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পর দেশবাসী এ সময়টাকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলেও অভিহিত করছে।

এছাড়া, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ এবং বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন-স্বার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার মুহূর্তকে স্মরণ করে আজ বিজয় দিবস উদযাপন শুরু হয়েছে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং এরপর প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

আপনি সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
    © ২০২৪ বুড়িগঙ্গা টিভি কর্তৃক সর্বসত্ব সংরক্ষিত।
 
Theme Customized By BreakingNews