অনলাইন ডেস্ক: সাংবাদিকতা করে খাওয়া আর সাংবাদিকতা বেচে খাওয়া এক জিনিস নয়। মূলধারার সাংবাদিকরা তো সাংবাদিকতা করে খায় কিন্তু কার্ড মার্কা সাংবাদিকেরা সাংবাদিকতা বেচে খায়। আর আমরা এই বেচে খাওয়াটারই বিরোধিতা করি। বিরোধিতা করার জন্য সিটিজেন জার্নালিজম সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে, তাই মত প্রকাশের অবাধ স্বাধীনতায় আপনি হস্তক্ষেপ করার কে..? আপনি কি সাংবাদিকতার সার্টিফিকেট দেওয়ার অথরাইজড পারসন…??? নাকি সাংবাদিকতা সংশ্লিষ্ট কোনো অথরিটি…!!!
সাংবাদিকতার প্রকারভেদই জানেন না, আবার বলেন চুলকানি কেনো???
আবার এরাই নতুন কোনো ব্যক্তি সাংবাদিকতা জগতে প্রবেশ করতে চাইলে, স্বাগত জানানোর পরিবর্তে চীনের মহা প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায়, যেনো সাংবাদিকতা পেশা তাদের পৈতৃক ও ওয়ারিশান সম্পত্তি। কিন্তু যদি সিনিয়র সাংবাদিক তথা পীর সাহেবদের কিছু হাদিয়া-তোহফা, দান-দক্ষিণা দিতে পারেন এবং তাদের চাটুকারিতা ও দালালি করতে পারেন, তাহলে সাংবাদিকতার নিয়োগ পত্র ও আইডি কার্ড নেনো সেকেন্ডের মধ্যেই আপনার হস্তগত হয়ে যাবে!!!
যদিও এখনো সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জন্য ডিগ্রি পাশ বাধ্যতামূলক করে কোনো নির্দেশনা জারি করেনি। কিন্তু জনগণের উল্লেখযোগ্য অংশ সাংবাদিকদের নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিগ্রি পাশ হিসেবে দাবী করছেন। যেহেতু বাংলাদেশ একটা জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র, সেহেতু জনদাবীর সাথে আমিও একমত।
কিন্তু কতিপয় সাংবাদিক এখন সাংবাদিকদের নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণের ঘোর বিরোধী। একাডেমিক শিক্ষা ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই মেধা ও নৈতিকতার বিকাশ সাধিত হয়, অথচ এরা সাংবাদিকতা পেশাকে একটা সুউচ্চ মর্যাদার স্তরে নিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছে। কারণ তাহলে তো থলের বিড়াল অর্থাৎ তাদের অযোগ্যতা ও ধান্ধাবাজির ময়লা স্তুপের পঁচা দুর্গন্ধ বেরিয়ে পড়বে।
যদি নূন্যতম ডিগ্রি পাশ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়, তখন এদের এই ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিবে।
১। পত্রিকায় নিয়োগ দিয়ে টাকা কামানোর পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
২। আইডি কার্ড বিক্রি করে অর্থ উপার্জন বন্ধ হবে।
৩। আইডি কার্ড নবায়ন করে বার্ষিক আয় বন্ধ হয়ে যাবে। ৪। নির্বাচনী পর্যবেক্ষক কার্ড পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা বন্ধ হয়ে যাবে।
৫। প্রতি মাসে পত্রিকা কর্তৃক মাঠ পর্যায়ের রিপোর্টার হতে মাসিক চাঁদা আদায় বন্ধ হয়ে যাবে।
আবার কেউ কেউ কবি নজরুল ও রবীন্দ্রনাথদের সাথে তুলনা করে বলেন, এরাতো পড়াশোনা না করেই মহাজ্ঞানী ও মনীষী হয়েছেন। এরকম বিষয়গুলো তো এক্সসেপশনাল, যুগে এমন ব্যক্তিদের আগমনে পৃথিবী হবে জ্ঞান বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ। কিন্তু এগুলোতো উদাহরণ হতে পারে না। বর্তমান পৃথিবী কি শুধু এদের থিউরির উপর দাঁড়িয়ে আছে…??? নাকি অব্যাহত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে…???
যদি একাডেমিক শিক্ষাকে অস্বীকার করেন, তাহলে আমাদের আর পড়াশোনা করার কি দরকার…!!! আসুন, আমরাও পড়াশোনা বাদ দিয়ে মহাজ্ঞানী ও মনীষীদের কাতারে নাম লেখাই…!!! আসুন দেখি, কয়জন পারবেন…!!!
আসল বিষয় হলো মাঠ পর্যায়ে আপনাদের রিপোর্টার নামক কিছু মুরিদান আছে, যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার নামগন্ধও নেই এবং সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতার ছিটেফোঁটাও নেই, নিউজ ভেল্যু ও নিউজ সেন্স বুঝে নিউজ ট্রিটমেন্ট করতে হয়, এটাই তো এরা এখনো জানে না, আর আপনারা পীর সাহেব হিসেবে এই মুরিদানদের খেলাফত দিয়ে মাঠে ছেড়ে দিয়েছেন… নিম্নোক্ত কারণে ১। প্রতিদ্বন্দ্বী পত্রিকার বিরোধিতা করা ২। পরোক্ষভাবে নিজ সহকর্মীর চরিত্র হনন ও হেনস্থা করা ৩। নিজের উপরি কামাই ও ধান্ধা অব্যহত রাখা ৪। হলুদ সাংবাদিকতা ও অপ-সাংবাদিকতার মাধ্যমে স্বার্থসিদ্ধি করা
৫। কখনো হাতিয়ার কিংবা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা ৬। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক লিংক বজায় রাখা
কেউ কেউ বলেন বিনা পয়সায় নাকি জনসেবা করতে সাংবাদিকতা পেশায় আসছেন..!!! তাহলে এই পেশায় না এসে আমাদের মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকা ও এতিমখানায় বিনা পয়সায় শ্রম দেন, দুনিয়ায় অশেষ কল্যাণ ও আখেরাতে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকাম পাবেন। এখন দেখি কতজন আসবেন আসেন…!!!! চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম….!!!
Leave a Reply