1. ashiqnur96@gmail.com : editor :
রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পাঁচ দশকের ব্যবধানে প্রথম কোনো পাকিস্তানি জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগসহ ২৬টি দলের মতামত না চাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেনঃ সংস্কার কমিশন সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা সামনে এলে জনগণ তা মেনে নেবে নাঃ তারেক রহমান আজিমপুরে বাসা থেকে অপহৃত আট মাসের সেই শিশু উদ্ধার জুমার নামাজের খুতবার গুরুত্ব কেরানীগঞ্জে দেড় কোটি মুল্যের সরকারি জমি উদ্ধার ক্রীড়া সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইমন চৌধুরীকে সন্মাননা প্রদান অপহরণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র কারাগারে ঢালাও মামলার প্রবণতা বিব্রতকরঃ আইন উপদেষ্টা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলা বাতিল

তীব্র গরমের পর হবে ‘অতিবৃষ্টি’,দুর্বল ‘এল নিনো’

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ১ মে, ২০২৪

ডেস্ক নিউজ: তীব্র গরমের পর এবার বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি (অতিবৃষ্টি) হতে পারে। বাংলাদেশে বৃষ্টি যেমন বেশি হবে, তেমনি ভারতের রাজ্যগুলোতেও অতিবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বর্ষায় বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

ভারতের পুনেতে ২৮তম সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলুক ফোরামের (সাসকফ) সম্মেলনে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়। সম্মেলনে এ অঞ্চলে চলমান তীব্র গরম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মূল বিষয় ছিল আসন্ন বর্ষা মৌসুম (জুন-সেপ্টেম্বর)।

দুদিনব্যাপী এ সম্মেলন মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) শেষ হয়। সম্মেলনের অধিবেশন শেষে বর্ষা মৌসুমে আবহাওয়া পরিস্থিতি কী দাঁড়াতে পারে, তা নিয়ে একটি বিবৃতি প্রচার করা হয়।

সভায় আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হবে। যা চলবে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে।

আলোচনা শেষে বিশেষজ্ঞদের মতামত– এ অঞ্চল অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার আবহাওয়া থেকে ‘এল নিনো’ দুর্বল হয়েছে। অন্যদিকে, ‘লা নিনা’ সক্রিয় হয়েছে। এর মানে হলো, শিগগিরই এই অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন– বাংলাদেশসহ পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মধ্য ভুটানের বেশিরভাগ অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। অন্যদিকে, আফগানিস্তান, ভুটানের কিছু এলাকা এবং মিয়ানমারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

ভারত ও বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই তীব্র গরম পড়ছে। সাসকফের আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলমান গ্রীষ্মে বেশিরভাগ অঞ্চলে স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হবে। আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চল, পাকিস্তানের উত্তর ও পূর্ব অঞ্চল, লাক্ষাদ্বীপ, শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল, নেপাল, ভুটান, মায়ানমারসহ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

এল নিনো-লা নিনা কী?

বিগত দুই বছরের মতো এবারও দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে যে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, তার প্রধান কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা এল নিনো নামে আবহাওয়ার এক বিশেষ অবস্থাকে দায়ী করছেন। এল নিনো কী? ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, এল নিনো হলো একটি জলবায়ু প্যাটার্ন। এটির মাধ্যমে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের পানি উষ্ণ হয়ে পড়ে। এল নিনো সক্রিয় হলে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত একটি শুষ্ক রেখা তৈরি হয়।

এল নিনোর উল্টো অবস্থা হলো লা নিনা। এটি তৈরির সময় শুষ্ক রেখাটি উষ্ণ রেখায় পরিণত হয়। এতে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেড়ে গিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি বেড়ে যায়।

এল নিনো হলো শুষ্ক মওসুম, যখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম বৃষ্টি হয় এবং বন্যাও কম হয়। এসময় তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। আর লা নিনার সময় বেশি বৃষ্টি আর বেশি বন্যা দেখা যায়। তাপমাত্রা কমে যায় স্বাভাবিকের চেয়ে।

দুজনের সঙ্গে সমুদ্রের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আসলে এল নিনো ও লা নিনা হলো প্রাকৃতিকভাবে তৈরি একটি জলবায়ুর ধরন। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা এবং বায়ুমণ্ডলীয় চাপের ক্রমাগত পরিবর্তন থেকে এদেরকে মূলত চিহ্নিত করা হয়।

এল নিনো দুই থেকে সাত বছরের বিরতি দিয়ে অনিয়মিতভাবে হয়ে থাকে। এল নিনো কোনো নিয়মিত চক্র নয় অথবা এ নিয়ে আগে থেকে কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। সাধারণত ২ থেকে ৪ বছর স্থায়ী হয় এল নিনো। সাধারণত এল নিনো শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লা নিনার গঠন শুরু হয়। অর্থাৎ এল নিনো হলে লা নিনা হতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়।

দক্ষিণ এশিয়ায় এল নিনোর কী প্রভাব?

স্বাভাবিক আবহাওয়াকে একেবারে একশ আশি ডিগ্রি ঘুরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে এল নিনো। ঠিক এমনটিই দেখা যাচ্ছে চলতি বছরে। গত বছরে শুরু হওয়া এল নিনোর প্রভাব এখন রয়েছে চরম অবস্থায়।

পুবালি বায়ু যখন পূর্বে না বয়ে পশ্চিমে বয়ে যায়, তখন অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার- এই পুরো অঞ্চলটিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যায়। কারণ, বাতাসের প্রবাহ সমুদ্রস্রোতকে বয়ে নিতে থাকে পশ্চিম দিকে।

আর উপমহাদেশ থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত এসব অঞ্চলে দেখা দেয় বৃষ্টির অভাব। বেড়ে যায় তাপমাত্রা। শুকিয়ে যায় মাটি। এমনকি খরাও দেখা দিতে পারে। আবহাওয়ার এই চরিত্র বদলে দেয়া এল নিনো কখন হবে বা কেন হবে, তা এখন পর্যন্ত ঠাওর করতে পারেন না বিজ্ঞানীরা।

আবহাওয়াবিদরা আর বিজ্ঞানীরা এল নিনোর কিছু লক্ষণ বের করেছেন। সেগুলো হলো– ভারত মহাসাগর, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার ভূপৃষ্ঠের চাপ বেড়ে যাওয়া। তাহিতি, প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে বায়ুমণ্ডলের চাপ বেড়ে যাওয়া। এতে করে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খরা দেখা দেয়।

গত বছরের এপ্রিলে জলবায়ুবিদরা এল নিনোর ব্যাপারে সতর্কতা দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, ২০২৩ সালে এটির প্রভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। যদি ২০২৩ সালে প্রভাব না পড়ে তাহলে ২০২৪ সালে এটি বেশ ভালোভাবে পরিলক্ষিত হবে। সেই পূর্বাভাস সত্যি করেই ২০২৪ সালের শুরু থেকেই দাবদাহে জেরবার মানুষ। এপ্রিল-মে মাসের তীব্র গরমে হিমশিম খেতে হচ্ছে এখানকার অধিবাসীদের।

এরইমধ্যে স্বস্তির খবর শুনিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যুরো অব মেটিওরোলজি (বিওএম)। তারা জানিয়েছিল, এল নিনো সাউদার্ন অসিলেশন নিরপেক্ষ অবস্থায় ফিরে এসেছে। এর ফলে ফিরে আসছে লা নিনা। আর গতকাল এলো সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলুক ফোরামের অতিবৃষ্টির খবর। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ অঞ্চলের আবহাওয়া থেকে দুর্বল হয়েছে এল নিনো আর সক্রিয় হয়েছে লা নিনা। এর মানে হলো, শিগগিরই এই অঞ্চল শীতল হবে বৃষ্টিতে। সেই বৃষ্টি স্বাভাবিক হবে, না স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, এখন সেটাই দেখার।

আপনি সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
    © ২০২৪ বুড়িগঙ্গা টিভি কর্তৃক সর্বসত্ব সংরক্ষিত।
 
Theme Customized By BreakingNews