ডেস্ক নিউজ: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সম্ররামুন্ডা (৫৫)। তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছ ধরে স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করতেন। গত (২৩ মার্চ) তিনি স্থানীয় একটি হাওরে মাছ ধরতে গেলে সেখানে তার পায়ুপথ দিয়ে একটি কুঁচিয়া মাছ ঢুকে যায়। সেই মাছ তার পেটের ভেতর জীবিত ছিল প্রায় ৩৬ ঘণ্টা। পরে রোববার (২৪ মার্চ) রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার পেট থেকে মাছটি বের করা হয়।
বুধবার (২৭ মার্চ) পেট থেকে কুঁচিয়া বের করার সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা দিয়েছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী জানে আলম।
তিনি বলেন, অস্ত্রোপচারের আগে নিশ্চিত হতে শুধু রোগীর পেটের এক্স-রেটি তাদের হাতে ছিল। জরুরি হওয়ায় বেশি কিছু পরীক্ষা করা যায়নি। অনেক সময় কোনো কোনো রোগীর অবস্থা এত সংকটাপন্ন থাকে যে পরীক্ষা ছাড়াই অস্ত্রোপচার করতে হয়। সম্রা মুন্ডার অস্ত্রোপচার এত জরুরি ছিল, সিটি স্ক্যান করার সময়ও পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষণ দেরি করলে সেপ্টিসেমিয়া (রক্তে জীবাণুর সংক্রমণ) হয়ে যেত। সরাসরি অস্ত্রোপচারই ভালো সিদ্ধান্ত ছিল।
এই চিকিৎসক বলেন, বৃহদন্ত্রের একটি অংশ ‘সিগময়েড কোলন’-এর প্রায় তিন থেকে চার সেন্টিমিটার ছিদ্র করে পেটের ‘পেরিটোনিয়াল ক্যাভিটির’ মধ্যে ঢুকে পড়েছিল কুঁচেটি। সেখানে কিছুটা অক্সিজেন পাওয়ায় এটি বেঁচে ছিল। তিনি বলেন, এমন ঘটনা মাঝেমধ্যে পাওয়া যায়। তবে জীবন্ত পাওয়া এবারই প্রথম। রোগীর পেটের বাঁ পাশ দিয়ে মল বের হওয়ার রাস্তা বের করতে হয়েছে। দেড় মাস পর সেটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে আরেকটি অস্ত্রোপচার করা হবে। রোগীকে আরও ১০ দিন হাসপাতালে রেখে সেলাই শুকিয়ে যাওয়ার পর ছাড়পত্র দেয়া হবে।
এই বিষয়ে হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, সম্রা মুন্ডার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখন অক্সিজেনের সহায়তা লাগছে না। তাকে পানিজাতীয় খাবার মুখে দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া পেটে সংক্রমণ রোধে মেরোপেনম ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রেখে পেটের সেলাই কাটার পর তাকে ছাড়পত্র দেয়া হবে।
Leave a Reply