ডেস্ক নিউজ: সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীকে শিক্ষকের গুলির ঘটনায় শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস ও কলেজের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর নাম- আরাফাত আমিন তমাল (২২)। তিনি ওই মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের অষ্টম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বগুড়া পৌর শহরের নাটাই পাড়া ধানসিঁড়ি মহল্লার আবদুল্লা আলামিনের ছেলে। অভিযুক্ত হলেন- কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরীফ। সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক তার বাবা। শহরের দত্তবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন রায়হান শরীফ।
জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের কাছ থেকে দুটি লাইসেন্স বিহীন বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড গুলি ও আটটি চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন অধ্যাপক ডা. বায়জিদ খুরশিদকে প্রধান করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে আহত শিক্ষার্থীর বাবা ও পুলিশ বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে এই ঘটনার পর থেকে ডা. রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন অপকর্মের চিত্র। তার বেপরোয়া চলাফেরা এবং প্রায়ই শ্রেণি কক্ষে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে ক্লাস রুমে প্রবেশের তথ্য। নানা কারণে শিক্ষার্থীদের গুলি করার হুমকি দিতেন তিনি। আর রাত হলেই ছাত্রীদের মুঠোফোনে উত্যক্ত করতেন ও ভয়ভীতি দেখাতেন। ভয়ে শিক্ষার্থীরা এতদিন কিছু না বললেও সহপাঠীকে গুলির ঘটনার পর থেকে বেরিয়ে আসছে এসব তথ্য।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জ সদর থানায় আহত শিক্ষার্থী তমালের বাবা ও পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে ফরেনসিক মেডিসিন আইটেম ক্লাস চলাকালীন সময় শিক্ষকের গুলিতে তমাল আহত হন। তার পায়ে গুলি লাগে। এরপরই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শিক্ষককে হেফাজতে নেয়, জব্দ করা হয় তার পিস্তলটিও।
Leave a Reply