ডেস্ক নিউজ: লেখক-পাঠক ও প্রকাশকদের প্রাণের বইমেলা ঘিরে অপেক্ষায় কাটে পুরো বছর। নতুন চিন্তার, নতুন লেখা নিয়ে পাঠকের সামনে আসতে দিন গুনতে থাকেন লেখকরা। মেলার আগে থেকে বই ছাপানোর কাজে নামেন প্রকাশকরা। শুরুর দিন থেকে মেলা চলাকালে প্রতিদিনই পাঠকের হাতে ওঠে নতুন বই।
এ ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মেলায় এসেছে ৭৮টি নতুন বই। আর এ নিয়ে মেলার মোট ২২ দিনে নতুন বই এসেছে ২ হাজার ৪০৪টি। বাংলা একাডেমি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। একাডেমির তথ্য বলছে, ২১ ফেব্রুয়ারি নতুন বই এসেছে ২৩৪টি, ২০ ফেব্রুয়ারি এসেছে ৯৯টি, ১৯ ফেব্রুয়ারি ১১৫টি, ১৮ ফেব্রুয়ারি ৮৩টি, ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৭১টি, ১৬ ফেব্রুয়ারি নতুন বই এসেছে ২৯৮টি, ১৫ ফেব্রুয়ারি ৯৭টি, ১৪ ফেব্রুয়ারি ৯১টি, ১৩ ফেব্রুয়ারি ১১০টি, ১২ ফেব্রুয়ারি ১১৫টি, ১১ ফেব্রুয়ারি ৯২টি, ১০ ফেব্রুয়ারি ১৫২টি, ৯ ফেব্রুয়ারি ১৭১ টি, ৮ ফেব্রুয়ারি নতুন বই আসে ৮০টি, ৭ ফেব্রুয়ারি এসেছে ৬৯টি, ৬ ফেব্রুয়ারি ১০৮টি, ৫ ফেব্রুয়ারি ৭০টি, ৪ ফেব্রুয়ারি ৬৬টি, ৩ ফেব্রুয়ারি ৭৪টি এবং ২ ফেব্রুয়ারি নতুন বই এসেছিল ৩১টি।
এবারের বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমির মাঠে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ বছর মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত বছর ৬০১টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মোট ৯০১টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।
১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের সামনে পাটের চটের ওপরে মাত্র ৩২টি বইয়ের পসরা সাজিয়ে স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ বইমেলার যাত্রা শুরু করে। সে সময়ে এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী চিত্তরঞ্জন সাহার হাত ধরেই মূলত বইমেলার যাত্রা শুরু হয়। এরপর ১৯৭৩ সালের ১৫ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি বিশেষ ছাড়ে নিজেদের বই বিক্রির ব্যবস্থা করে। এর পাশাপাশি একাডেমির প্রাঙ্গণে বেশ কিছু প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানও ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বই বিক্রি শুরু করে।
১৯৭৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় সাহিত্য সম্মেলনের বই প্রদর্শনী ও ম্যুরাল প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমি কেবল প্রকাশনা সংস্থাগুলোকে জায়গা বরাদ্দ দিত। আয়োজক হিসেবে তাদের অফিসিয়াল কোনো পরিচিতি ছিল না। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমি সরাসরি মেলায় সম্পৃক্ত হয়। ১৯৭৯ সালে একাডেমির সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি। সেই থেকে শুরু করে আজ অবধি বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হচ্ছে অমর একুশে বইমেলার।
শুরুতে বইমেলা হতো ২১ দিন ধরে। ১৯৮১ সালে এটি কমিয়ে ১৪ দিনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও প্রকাশক ও পাঠকদের দাবির মুখে তা আবার ২১ দিনে ফিরিয়ে আনা হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সাল থেকে পুরো মাসজুড়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাঙালির প্রাণের এ মেলা।
Leave a Reply