1. ashiqnur96@gmail.com : editor :
রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পাঁচ দশকের ব্যবধানে প্রথম কোনো পাকিস্তানি জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগসহ ২৬টি দলের মতামত না চাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেনঃ সংস্কার কমিশন সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা সামনে এলে জনগণ তা মেনে নেবে নাঃ তারেক রহমান আজিমপুরে বাসা থেকে অপহৃত আট মাসের সেই শিশু উদ্ধার জুমার নামাজের খুতবার গুরুত্ব কেরানীগঞ্জে দেড় কোটি মুল্যের সরকারি জমি উদ্ধার ক্রীড়া সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইমন চৌধুরীকে সন্মাননা প্রদান অপহরণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র কারাগারে ঢালাও মামলার প্রবণতা বিব্রতকরঃ আইন উপদেষ্টা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলা বাতিল

কেরানীগঞ্জে রাসেল হত্যায় জড়িতরা বিদেশে পালানোর চেষ্টা, রাব্বিসহ গ্রেপ্তার ১২

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৪

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা ইউনিয়নের তেলঘাট এলাকায় পারভিন টাওয়ারের আন্ডার গ্ৰাউন্ডে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে রাসেল (৩২) নামের এক যুবকে হত্যা করেন তার বন্ধুরা।

ফেসবুক পেইজে ভিডিও ফুটেজ দেখতে ক্লিক করুন: বিদেশে পালানোর সময় গ্ৰেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা (বহিষ্কার) রাব্বি ও তার ৬ সহযোগী

এসময় হত্যার মূল হোতা রাব্বি বাহিনীর প্রধান রাব্বিকে বেশ কয়েকবার ‘ আব্বা ডেকেও রেহাই পায়নি নিহত রাসেল। ঘটনার পর রাব্বি ও তার সহযোগীরা পালিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করে। পরবর্তীতে পুলিশের একটি আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্যে ঝিনাইদহ জেলার মহেষপুর থানার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বাঁশবাড়িয়া বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অত্র হত্যাকান্ডের মূলহোতা আফতাব উদ্দিন রাব্বি, সজীব (৩৬), রাজীব (৩৫), হীরা (৩০), ফিরোজ (৩১) কে গ্রেপ্তার করে।

বুধবার বেলা ১১টায় এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং এর আয়োজন করেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, গত ১০ জানুয়ারী অনুমানিক রাত ৮টার সময় রাসেলকে তার বন্ধু আফতাব উদ্দিন রাব্বির লোক মারফত দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার তেলঘাটে পারভিন টাওয়ারের নিচ তলায় তার নিজ অফিসে ডেকে নিয়ে যায়।রাসেল রাব্বির অফিসে হাজির হলে সেখানে উপস্থিত রাব্বির অন্যান্য বন্ধুরা রাব্বির নেতৃত্বে রাতভর রাসেলকে এলোপাথাড়িভাবে লাঠিসোঠা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রচন্ড মারধর করে মারাত্মক জখম করে এবং কেচি দিয়ে রাসেলের মাথার চুল কেটে দেয়।

নির্যাতনের একপর্যায়ে রাত ২টার দিকে রাসেল গুরুতর অসুস্থ্ হয়ে পড়লে রাব্বির নির্দেশে ৪/৫ জন লোক রাসেলকে অজ্ঞান অবস্থায় তার বাসায় পৌঁছে দেয় এবং রাসেলের স্ত্রীকে এ বিষয়ে থানা পুলিশ বা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকী প্রদান করে আসামীরা চলে যায়।পরদিন সকালে রাসেলের শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তার স্ত্রী তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত মিডফোর্ড হাসপাতাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন। রাসেল মারা যাওয়ার পর রাব্বির অফিসে নিহত রাসেলকে নির্যাতনের বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

আলোচিত হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় আফতাব উদ্দিন রাব্বিকে ১ নম্বর আসামী করে ১৩ জন এজাহারনামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

চাঞ্চল্যকর ও ব্যাপক আলোচিত এই হত্যাকান্ডের শুরু থেকেই ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও ঘটনায় জড়িত আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান (পিপিএম-বার) সার্বক্ষণিক তদারকি ও দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন ও ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে ঘটনার পর থেকেই ব্যাপক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, হত্যাকান্ডের সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা পুলিশ হত্যার ঘটনাস্থলে (রাব্বির অফিস) গিয়ে হত্যাকান্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন আলামত জব্দ করে। হত্যাকান্ডে জড়িত এজাহারনামীয় আসামী ছাড়াও তদন্তটিম ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ ও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া নির্যাতনের বিভিন্ন ভিডিও পর্যালোচনা করে ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের শনাক্ত করে।

অভিযানের ধারাবাহিকতায় গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোলা জেলার লালমোহন থানায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত আসামী আলমগীর ঠান্ডু (৩৯), আমির (৩৮), রনি (৩৫), দেলোয়ার দেলু (৩৭), শিপন (৩১), মাহফুজ (৩৬) ও মোঃ রতন শেখ (২৮) সহ ১২ আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অত্র হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানান তিনি । আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের কারণ সম্পর্কে জানা যায়, নিহত রাসেল ১ নম্বর আসামী রাব্বির বন্ধু ছিলো,কালিগঞ্জ এলাকায় রাসেল বিভিন্ন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে রাব্বির নামে চাঁদা তোলে কিন্তু রাসেল সেই টাকা রাব্বি ও তাদের অন্যান্য সহযোগীদের না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করে, মূলত আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে ও পারস্পারিক মতবিরোধের জেরে রাব্বি ও তার সহযোগীরা রাসেলের উপর ক্ষুদ্ধ হয় এবং রাসেলকে উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় রাসেলকে মারার জন্য রাব্বি লোকজন দিয়ে রাসেলকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে আসে। তারপর উক্ত অফিস রুমে রাব্বি ও তার সহযোগীরা মিলে সারারাত রাসেলকে প্রচন্ড মারধর করে ও কেচি দিয়ে রাসেলের মাথার চুল কেটে দেয়।

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন: রাব্বি সহ ১২ ঘাতক পুলিশের হাতে গ্ৰেপ্তার

নির্যাতনের একপর্যায়ে রাসেল তার বন্ধু রাব্বিকে ‘আব্বা আব্বা’ বলে ডাকে ও বাঁচার জন্য আকৃতি মিনতি করতে থাকে কিন্তু তার পরেও সবাই মিলে তাকে পালাক্রমে মারতে থাকায় রাসেল গুরুতর আহত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে। একপর্যায়ে রাব্বির লোকজন আহত রাসেলকে অচেতন অবস্থায় রাত ২টার দিকে তার বাসায় স্ত্রীর কাছে দিয়ে আসে। পরদিন সকালে রাসেলকে চিকিৎসার জন্য মিডফোর্ড হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাসেল মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। হত্যাকান্ডে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি ।

আপনি সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
    © ২০২৪ বুড়িগঙ্গা টিভি কর্তৃক সর্বসত্ব সংরক্ষিত।
 
Theme Customized By BreakingNews