স্পোর্টস ডেস্ক: অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি দেখতে চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় করে বাংলাদেশের ক্রীড়াপ্রেমী থেকে শুরু করে ক্রিকেটবোদ্ধারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ ফেললেই দেখা মেলে ‘মাশরাফিকে বিসিবি সভাপতি হিসেবে চাই’ এমন মন্তব্যের।
গত বুধবার (১০ জানুয়ারি) নতুন মন্ত্রিসভায় নাজমুল হাসান পাপনের নাম ঘোষণা করার পর এ দাবি আরও জোরালো হয়। সে সঙ্গে অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নামও যুক্ত হয়। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন পাপন। এরপর তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
এরপর থেকে গুঞ্জন শুরু হয় পাপন মন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতি হিসেবে কি দায়িত্ব পালন করে যাবেন? কেননা আগামী বছরের আগস্ট পর্যন্ত বিসিবি সভাপতি হিসেবে মেয়াদ রয়েছে পাপনের। যদিও মন্ত্রীত্বের সঙ্গে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে আইনানুগ কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
তবে মন্ত্রী হিসেবে শপথের আগে বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পাপন দায়িত্ব ছাড়ার ইঙ্গিত দেন। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিষয়টি খোলাসা করে জানান, পারলে চলতি কমিটির মেয়াদ শেষ হলেই তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।
অনেকরই ধারণা পাপন মন্ত্রী হওয়ায় বিসিবি সভাপতি পদে এবার পরিবর্তন আসবে। তাই সে পদে মাশরাফি ও সাকিব ভক্তরা তাদের দেখতে চায়। কিন্তু বিসিবির গঠনতন্ত্র বলছে ভিন্ন কথা। গঠনতন্ত্র অনুসারে সহসাই বিসিবির সভাপতি হতে পারবেন না মাশরাফি-সাকিব।
বিসিবির গঠনতন্ত্র বলছে, বিসিবির কাউন্সিলর থেকে পরিচালক পদে নির্বাচিত হওয়ার পরই সভাপতি হওয়ার সুযোগ থাকে। এখনো ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া মাশরাফি ও সাকিব কাউন্সিল কিংবা পরিচালক কিছুই নন। বিসিবির কাছে এ দুই ক্রিকেটার এখনো অন্য একজনের মতো সাধারণ ক্রিকেটার।
এ বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন সুজন বলেন, বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতিকে নির্বাচিত সভাপতি হতে হয়। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশ হওয়ায় আইসিসির গাইড অনুযায়ী আমাদের গঠনতন্ত্র তৈরি করা। যেখানে বিসিবির প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত হতে হবে। সেক্ষেত্রে যেই বিসিবি প্রেসিডেন্ট হোক, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রথমে কাউন্সিলর হতে হবে। পরবর্তীতে ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা তখন বোর্ড সভাপতি নির্বাচন করবেন। যেহেতু আমাদের আগের যে একটা প্রক্রিয়া ছিল যে সরকার থেকে মনোনীত একজন ব্যক্তি ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হবেন সেই বিষয়টা এখন আমাদের গঠনতন্ত্রে নেই। এই বিষয়টা এখন আর প্রযোজ্য নয়। একটা নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে বোর্ড সভাপতি হতে পারবে, যদি পজিশনটা খালি হয়।
তাই সাকিব ও মাশরাফিকে এই পদে আসতে হলে প্রথমে কাউন্সিলর হয়ে বিসিবিতে প্রবেশ করতে হবে। এরপর পরিচালক পদে নির্বাচিত হতে হবে। পরিচালক হওয়ার পরই আসবে বিসিবি সভাপতি হওয়ার সুযোগ। এদিকে পাপনের মেয়াদ আছে দেড় বছরের বেশি। তিনি যদি মন্ত্রীত্ব এবং বিসিবি প্রধানের কাজ একসঙ্গে সামলান তাহলে সহসাই পরিবর্তনের সুযোগ নেই বলাই যায়।
আর যদি তিনি সরেও যান তাহলে বর্তমান পরিচালক পদে থাকা কেউ বসবেন সভাপতির আসনে। এর আগেও মন্ত্রী থেকে বিসিবি প্রধানের পদ সামলানোর নজির রয়েছে দেশের ক্রিকেটে। এখন দেখার বিষয় কিভাবে দায়িত্ব সামলান পাপন।
Leave a Reply