কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) : ঢাকার কেরানীগঞ্জে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা তদন্তে কেরানীগঞ্জ, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর ও রাজধানীর বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে আন্তজেলা ডাকাত চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে কেরানীগঞ্জ মডেল ও দক্ষিণ থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ৪টি বড় ছোরা, ১টি সেলাই রেঞ্জ, ১টি শাবল, ২টি স্কু ড্রাইভার ও ডাকাতি করা ১১ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৭হাজার টাকা, ৩টি মোবাইল ফোন, রিমোটসহ ১টি স্মার্ট টেলিভিশন ও বেশ কিছু ব্যবহৃত কাপড়—চোপড় উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হল: ডাকাত সরদার ইলিয়াস ওরফে মাস্টার (৪৮), শাহীন ওরফে ভাগিনা (২৮), সোহেল (৪০), বাবুল (২৪), আসাদ (৪৩), রাশেদুল ওরফে বিটু (৩০), ওহাব ওরফে নানা (৬২), সামাদ(৫০), দীপু (২০), মকবুল ওরফে মঙ্গল (২৭)।
আজ দুপুর ১২ টায় ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শীতের তীব্রতা ও কুয়াশা বাড়ার সাথে সাথে গত কয়েক সপ্তাহে দূর্ধর্ষ একদল ডাকাত কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন নির্জন এলাকায় অবস্থিত কয়েকটি বাড়িতে সিরিজ ডাকাতি করে আসছিলো। সশস্ত্র এই ডাকাতদল গভীর রাতে বাড়ীর গ্রিল কেটে ঢুকে পড়ে এবং দেশীয় অস্ত্রের মুখে উক্ত বাড়ীর সকলকে জিম্মি করে মূল্যবান স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও দামী কাপড়-চোপড় এমনকি টেলিভিশন পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায়। এইসব ডাকাতির ঘটনায় কেরাণীগঞ্জ মডেল ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় চারটি ডাকাতির মামলা রুজু হয়। কেরাণীগঞ্জ সার্কেল এর নেতৃত্বে একটি চৌকস তদন্ত দল দুর্ধর্ষ ডাকাতকে গ্রেপ্তারের জন্য কাজ শুরু করে। তদন্ত টিম প্রতিটি ডাকাতির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ও বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে এবং ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয় যে, ডাকাত সর্দার ‘মাস্টার’ এর নেতৃত্বে একটি ভয়ংকর ডাকাতদল সবগুলো ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। একপর্যায়ে তদন্ত দল তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত দুর্ধর্ষ এই ডাকাতচক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে আভিযানিক দল কেরাণীগঞ্জ, সাভার, নারায়নগঞ্জ, মাদারীপুর ও ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডাকাত দলের সরদার “মাস্টার” বলে পরিচিত কুখ্যাত ডাকাত ইলিয়াস (৪৮) সহ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ১০ সদস্য গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান আরও জানান, অভিযানকালে ডাকাতদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, লুষ্ঠিত স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতদলের সদস্যরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কেরানীগঞ্জে ডাকাতির ঘটনাগুলোতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ডাকাতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, তারা পুলিশের চোখকে ফাকি দেওয়ার জন্য মাছ ধরার জাল সাথে রাখে এবং কোথাও পুলিশ টহলটিম/চেকপোস্টে ধরা পড়লে তারা পেশায় জেলে এবং রাত্রে মাছ ধরতে যাচ্ছে বলে জানায়। ডাকাতদলের সদস্যদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। ডাকাত দলের পলাতক অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার ও লুষ্ঠিত অন্যান্য মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।
Leave a Reply