ডেস্ক নিউজ: আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৩ নভেম্বর খুলনায় জনসভায় ভাষণ দেবেন। ওই দিন দুপুর ২টায় নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে খুলনায় পদ্মা সেতু ও নৌকার আদলে মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। ১২০ ফুট দীর্ঘ ও ৪০ ফুট চওড়া মঞ্চের ওপরে পদ্মা সেতুর অবয়ব থাকবে। সেতুর ওপরে বোন শেখ রেহানাসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাঁড়িয়ে থাকার একটি ছবি রাখা হবে। আর পদ্মা সেতুর একটি কম্পার্টমেন্ট তৈরি করে সেটিকে নৌকার আকৃতি দেওয়া হবে। এর নকশা ইতোমধ্যেই দলীয় নেতাকর্মীদের উচ্ছসিত করেছে।
৮ নভেম্বর সকালে কেন্দ্রীয় নেতারা সার্কিট হাউস মাঠ পরিদর্শন ও মঞ্চ তৈরির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবেন। এ জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী খুলনার ২২টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা বলেন, ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই পদ্মা সেতুর আদলে দলীয় প্রতীক নৌকার অবয়বে মঞ্চ তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে। এবার মঞ্চটির দৈর্ঘ্য হবে ১২০ ফুট, আর প্রস্থ হবে ৪০ ফুট। পাশাপাশি ৪০০ মাইক স্থাপনের লক্ষ্য রয়েছে।
তিনি জানান, মঞ্চ তৈরি, জনসভাস্থল ও জনসভার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে কেন্দ্রীয় নেতারা খুলনায় এসেছেন। ৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় তারা মাঠ পরিদর্শন করবেন। এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বাহাউদ্দিন নাসিম, বিএম মোজাম্মেল ও এস এম কামাল হোসেনসহ স্থানীয় শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, সার্কিট হাউস থেকে কাস্টমস ঘাট, জেলখানা ঘাট, টুটপাড়া কবর স্থান ও পাওয়ার হাউস মোড় এলাকা পর্যন্ত মাইক লাগানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে। এ জনসভা স্মরণকালের বৃহৎ ও সেরা জনসভায় রূপ দিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি চলছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, আগামী ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ২২টি প্রকল্প উদ্বোধন ও ২টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রকল্পগুলোর তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হয়েছে।
উদ্বোধনযোগ্য প্রকল্পের তালিকায় (প্রস্তাবিত) রয়েছে গণপূর্ত বিভাগের ৮টি প্রকল্প। সেগুলো হলো—নগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে ‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’ ভবন নির্মাণ কাজ, শামসুর রহমান রোডে সিভিল সার্জনের অফিস ভবন ও বাসভবন। খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন কাজ। খুলনা শিক্ষানবিশি প্রশিক্ষণ দফতর সংস্কার ও আধুনিকায়ন কাজ। খুলনায় বিএসটিআই’র ১০তলা আঞ্চলিক অফিস স্থাপন ভবন। বিটাক, খুলনা কেন্দ্রে ১০ তলা বিশিষ্ট নারী হোস্টেল ভবন নির্মাণ। পাইকগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (সিভিল, স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক) কাজ। নগরীর দৌলতপুরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের চার তলা ছাত্র হোস্টেল নির্মাণ কাজ।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে—সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন (ইকোট্যুরিজম) সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত শেখেরটেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকল্প রয়েছে ১০টি। তা হলো—ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচ তলা একাডেমিক কাম চার তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কসপ ভবন নির্মাণ কাজ। বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা কলেজিয়েট স্কুল, সরকারি এল বি কে ডিগ্রি মহিলা কলেজ, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, চালনা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তালিমুল মিল্লাত রহমাতিয়া ফাজিল মাদরাসা, নজরুলনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং আরআরএফ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে ছয় তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ। আড়ংঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার ৪তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে—ডুমুরিয়া উপজেলার চরচরিয়া শিবনগর সড়কে ভদ্রা নদীর ওপর ৩১৫ দশমিক ৩০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নিৰ্মাণ কাজ।
উদ্বোধন প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে- খুলনা সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা উন্নয়ন ও পুনর্বাসন প্রকল্প এবং খুলনা শহরে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প। এর আওতায় হবে খালিশপুর বিআইডিসি রোডে ড্রেন, ফুটপাত নির্মাণসহ রাস্তা প্রশস্তকরণ ও পুনর্নির্মাণ কাজ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে- নগরীর দৌলতপুরে অতিরিক্ত পরিচালকের ছয় তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত অফিস ভবন।
এছাড়া ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনযোগ্য প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে দুটি। তা হলো—খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাথাভাঙ্গা এলাকায় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণ কাজ। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের আওতাধীন দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের পাঁচ তলা একাডেমিক কাম চার তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবন নির্মাণ কাজ।
Leave a Reply