চট্টগ্রাম ব্যুরো: নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সুড়ঙ্গপথ চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেল। প্রায় ৫ বছরের বিশাল কর্মযজ্ঞের পর স্বপ্নের সুড়ঙ্গপথ বঙ্গবন্ধু টানেল এখন উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত।
যুগান্তকারী এই প্রকল্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাসহ রক্ষণাবেক্ষণেও থাকছে বিশেষ পদক্ষেপ। টানেলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে দুর্ঘটনা বা অগ্নিকান্ড প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
এ টানেলে দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলায় থাকছে বিশ্বের সর্বাধুনিক সরঞ্জাম সমৃদ্ধ রেসপন্ডার টিম ও দুটি ফায়ার স্টেশন। তারপরও দুই প্রান্তে থাকবে দুটি পূর্ণাঙ্গ ফায়ারস্টেশন। এছাড়া দুই প্রান্তে নিরাপত্তা দেবে দুটি থানা।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. আবদুল হালিম জানান, এই টানেলে আগুন লাগার সম্ভাবনা খুবই কম। যদি কোন কোন কারণে আগুন লাগে যায় তাহলে এখানে অত্যাধুনিক ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে যা ইতোমধ্যে চালু হয়েছে।
এক সেকেন্ডের জন্যও বিদ্যুতহীন হওয়ার সুযোগ নেই টানেল। তাই তিনধাপে করা হচ্ছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা। এখন দুই প্রান্তে দুটি সাবস্টেশনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রীড থেকে বিদ্যুত দেয়া হচ্ছে। তবে বিকল্প হিসেবে থাকছে ২ ঘণ্টা ব্যাকআপ দেয়ার মতো ইউপিএস। এর বাইরে আছে নিজস্ব জেনারেটর। টানেলে সার্বক্ষণিক প্রয়োজন প্রায় ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
পিডিবি বিতরণ চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, এই টানেলের প্রয়োজনীয় লোডের চেয়ে বেশি লোড সম্পন্ন দুই পাশে দুইটা সাবস্টেশন ইতোমধ্যে করা হয়ে গেছে। এছাড়া ইউপিএস সিষ্টেম আছে একটি এবং টানেলের দুই টিউবেই আলাদা জেনারেটর ব্যবস্থা আছে। ফলে টানেলে যে কোন পরিস্থিতিতে ব্যাকআফ দেয়া সম্ভব হবে।
টানেলসহ আশপাশের এলাকার নিরাপত্তায় দুই প্রান্তে দুটি থানার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে সিএমপি। তবে তা অনুমোদনের আগ পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে দুই প্রান্তের ক্যাম্পের মাধ্যমে। প্রয়োজনে ভেতরেও থাকবে টহল।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, টানেলকে ঘিরে দুই ধরনের নিরাপত্তার কথা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। একটা হলো টেনেলের ভেতেরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অন্যটি হল টানেল যারা ব্যবহার করবে বা টানেলকে ঘিরে দুই পাড়ে যে শিল্পায়ন বা উন্নয়ন হবে। তার ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে দুই পাড়ে দুইটি পূর্ণাঙ্গ থানার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
এর বাইরে টানেলে যানবাহন ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিকভাবে পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
Leave a Reply