1. ashiqnur96@gmail.com : editor :
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ অপরাহ্ন

আজ শেখ রাসেলের জন্মদিন

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৩

ডেস্ক নিউজ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেল। তার জন্ম হয়েছিল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে। তবে শেখ রাসেল যখন পৃথিবীতে আসেন, তখন তার চারপাশে সবাই থাকলেও থাকতে পারেননি বঙ্গবন্ধু। কিন্তু নিজের প্রিয় ব্যক্তির নামটি ঠিকই ভালোবেসে ছেলেকে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
নিজের পছন্দের ব্যক্তির নামে ছোট্ট রাসেলের নাম দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম, তাই সব সময় বাবাকে পাশে পাবে না রাসেল এটাই তখন সাধারণ বিষয় ছিল। স্বল্পায়ু জীবনে বাবার সঙ্গে একরাশ স্মৃতি জমা করার সুযোগ হয়নি রাসেলের। তবে বাবাকে নিয়ে রাসেলের স্মৃতির ভাণ্ডার কিন্তু কম সমৃদ্ধ ছিল না।

জীবনের একটি বিশাল সময় বঙ্গবন্ধু জেলে কাটিয়েছেন। অন্য সন্তানেরা বিষয়টির গাম্ভীর্য বুঝলেও কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল বিষয়টি বুঝতে পারতো না। তাই শিশু রাসেল বাবাকে জেলে দেখতে এলে তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাইতো। ১৮ মাসের অবুঝ শিশুটি ধরেই নিয়েছিল যে কারাগারই ‘আব্বার বাড়ি’। বাবা থেকেও নেই, তাই মাকেই আব্বা ডাকা শুরু করেছিল ছেলেটি।

বঙ্গবন্ধুর কারাজীবনের একটি অধ্যায় প্রকাশিত হয়েছে তার বই কারাগারের রোজনামচায়। বইটির নাম দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ রেহানা। সেই বইতে প্রায় দু’বারের মতো রাসেলের কথা উল্লেখ করেছিলেন শেখ মুজিব।

যে সময়টাতে রাসেলের বয়স ১-২ বছর। তেমনই একটি দিন ১৯৬৬ সালের ১৫ জুন। রাসেল গিয়েছে বাবাকে দেখতে।

বাবা বঙ্গবন্ধু সেই বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে, ‘১৮ মাসের রাসেল জেল অফিসে এসে একটুও হাসে না, যে পর্যন্ত আমাকে না দেখে। দেখলাম দূর থেকে পূর্বের মতোই ‘‘আব্বা আব্বা’’ বলে চিৎকার করছে। জেল গেট দিয়ে একটা মালবোঝাই ট্রাক ঢুকছিল। আমি তাই জানালায় দাঁড়াইয়া ওকে আদর করলাম। একটু পরেই ভেতরে যেতেই রাসেল আমার গলা ধরে হেসে দিল। ওরা বলল, আমি না আসা পর্যন্ত শুধু জানালার দিকে চেয়ে থাকে, বলে ‘‘আব্বার বাড়ি’’। এখন ওর ধারণা হয়েছে এটা ওর আব্বার বাড়ি। যাবার সময় হলে ওকে ফাঁকি দিতে হয়।’

 

বঙ্গবন্ধুর ভাষায়, ‘৮ ফেব্রুয়ারি ২ বৎসরের ছেলেটা এসে বলে, ‘আব্বা বালি চলো’। কি উত্তর ওকে আমি দেব? ওকে ভোলাতে চেষ্টা করলাম, ও তো বুঝে না আমি কারাবন্দি। ওকে বললাম, ‘তোমার মার বাড়ি তুমি যাও। আমি আমার বাড়ি থাকি। আবার আমাকে দেখতে এসো। ও কি বুঝতে চায়! কি করে নিয়ে যাবে এই ছোট্ট ছেলেটা, ওর দুর্বল হাত দিয়ে মুক্ত করে এই পাষাণ প্রাচীর থেকে!’ পিতার মনও কাঁদে।

 

পিতা শেখ মুজিব লিখেছেন, ‘দুঃখ আমার লেগেছে। শত হলেও আমিতো মানুষ আর ওর জন্মদাতা। অন্য ছেলেমেয়েরা বুঝতে শিখেছে। কিন্তু রাসেল এখনও বুঝতে শিখে নাই। তাই মাঝে মাঝে আমাকে নিয়ে যেতে চায় বাড়িতে।’

রাসেলের মৃত্যুর দিনটিও পিতার আশীর্বাদেই উজ্জ্বল হওয়ার কথা ছিল। সমাবর্তন উপলক্ষে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। বঙ্গবন্ধুকে স্যালুট জানানোর জন্য ইউ ল্যাব স্কুলের পক্ষ থেকে বাছাই করা হয়েছিল ছয়জন শিক্ষার্থীকে। শেখ রাসেল ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম একজন।

কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে আর স্যালুট জানানো হয়নি রাসেলের। ঘাতকের বুলেট তার আগেই কেড়ে নিয়েছে ছোট্ট রাসেলের প্রাণ। মাত্র ১১ বছর বয়সে তাকে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করতে হয়।

গণমানুষের অন্তরে, প্রতিটির শিশুর মনে, নিভৃতে চির-বিরাজমান শেখ রাসেল। তার মৃত্যু হয়নি। আকাশে বাতাসে, নদীর কলতানে, অরণ্যের প্রাণশক্তিতে মিশে আছে, থাকবে মিশে অনন্তকাল।

 

আপনি সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
    © ২০২৪ বুড়িগঙ্গা টিভি কর্তৃক সর্বসত্ব সংরক্ষিত।
 
Theme Customized By BreakingNews