থাইল্যান্ডে পাঁচ যুবককে আটকে নির্যাতন ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে।
উন্নত জীবন ও মোটা টাকা রোজগারের স্বপ্ন দেখিয়ে মালয়েশিয়ায় নেওয়ার কথা বলে থাইল্যান্ডে আটক যুবকদের বাড়িতে ফোন করে এই মুক্তিপণের টাকা চাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী যুবকদের পরিবার।
ভুক্তভোগী যুবকরা হলেন- মনিরামপুর উপজেলার লাউড়ী গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে হামিদুল ইসলাম, একই গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে হুরাইরা হোসেন, হাজরাকাঠি গ্রামের আরিফ হোসেন, পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেন ও কেশবপুর উপজেলার আল-আমিন।
এদের বয়স ১৯-৩০ এর মধ্যে। এর মধ্যে ভুক্তভোগী হামিদুল ইসলামের মা ছেলেকে ফেরত পেতে মনিরামপুর থানায় অভিযোগ করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
বাংলাদেশি ৫ যুবককে থাইল্যান্ডে আটকে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ
২৭ দিন পর দেশে ফিরল সৌদিতে নিহতদের মরদেহ
আরও পড়ুন: কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ, সেই স্বাস্থ্য সহকারী বদলি
হামিদুলের মা সুফিয়া খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার সোনা ইটভাটায় কাজ করতো, সংসার ভালোই চলতো। মালয়েশিয়ায় মোটা অংকের বেতনে কাজ পাইয়ে দেবার টোপ দিয়ে প্রতিবেশী নুরুর মাধ্যমে তার বাড়িতে আসে মেহেদি হাসান ও মুরাদ হোসেন। মালয়েশিয়ায় নিতে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। টাকা পরিশোধের পর তার ছেলেকে মালয়েশিয়ায় নেবার জন্য গত ২২ জুন ঢাকায় নিয়ে যায়। এরপর একই মাসের ২৩ জুন মালয়েশিয়ার উদ্দেশে বিমান ছাড়বে বলে ছেলে হামিদুলের সঙ্গে শেষ কথা হয়। তারপর থেকে ছেলের সাথে যোগাযোগ বন্ধ। দালাল মেহেদির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ছেলে হামিদুল থাইল্যান্ডে আটক রয়েছে বলে জানায়। ছাড়াতে ৭০ হাজার টাকা পাঠাতে হবে। সেই টাকার জন্য এখন চাপ দেওয়া হচ্ছে।
আটক হুরাইরার স্ত্রী মারিহা খাতুন জানান, সামান্য ভিটেবাড়ি ছাড়া আমাদের আর কিছুই নেই। আত্বীয়-স্বজন ও এনজিও-সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে স্বামীকে পাঠানো হয়। এখন স্বামীকে ছাড়ানোর জন্য ফের টাকা চাচ্ছে দালাল মেহেদি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
এসব পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার সাধ্য তাদের কারও নেই। এ অবস্থায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে পরিবারের সদস্যরা। স্বজনদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আকুতি জানিয়েছেন তারা।
তবে মেহেদি মুক্তিপণের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, থাইল্যান্ডে বিমানের ট্রানজিট থাকায় তাদের নামানো হয়েছিল। তারা ৫ জন থাইল্যান্ডে বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সেখানে প্রশাসনের কাছে ধরা খায়।
একপর্যায়ে তিনি মূল ট্রাভেল এজেন্সি মালিক ফারুক হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছন্ন করে দেন।
পরে ফারুক হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে কলটি এক নারী রিসিভ করেন। তিনি ট্রাভেল এজেন্সিতে মাত্র জয়েন করেছেন জানিয়ে বলেন, ফারুক স্যার অসুস্থ হওয়ায় তিনি কথা বলতে পারছেন না।
মনিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply